Tuesday, February 14, 2023

১৫ ফেব্রুয়ারি ৭৬তম ‘টাইগার্স ডে’ ২০২৩ এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি (মৃ:১৯৮৪ ইং) জেনারেল এম এ জি ওসমানীর ৩৯তম মৃত্যু বার্ষিকী

 ১৫ ফেব্রুয়ারি টাইগার্স ডে ২০২৩

আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি (২০২৩) সাল। বাংলাদেশের সামরিক ইতিহাসে একটি গৌরব উজ্জল দিন। ১৯৪৮ সালের এই তারিখে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১ম ব্যাটালিয়ন সিনিয়র টাইগার এর প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাঙ্গালী জাতির পৃথক সামরিক সত্তা দি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের গোড়া পত্তন ঘটে। ঐতিহ্যবাহী এ রেজিমেন্টের আজ (৭৬) তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী।

 

দি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট উলে­খ করতে হলে বলতে হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী দুটি বাঙ্গালী মুসলিম পাইওনিয়ার কোম্পানী নিয়ে মেজর গনির অফুরন্ত উদ্যোগে প্রথম এ রেজিমেন্টের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠনে পাকিস্তান সরকারের অনুমোদন লাভের পর মুসলিম পাইওনিয়ার কোম্পানী নং ১২৫৬ ও ১৪০৭ এর অধিনায়ক মেজর এম এ গনি এবং ক্যাপ্টেন এস ইউ খান, ১৯৪৭ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকার কুর্মিটোলায় একত্রিত হয়ে নিজেদের কোম্পানীদ্বয়কে পূর্ণ গঠিত করে মেজর গণির অধিনায়কত্ত্বে ১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের গোড়া পত্তন করেন। পরবর্তিতে ১৯৪৮ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারি এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকার কুর্মিটোলা সেনানিবাসে তদানিন্তন পূর্ব বাংলার গভর্নর স্যার ফ্রেডরিক ১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের জন্ম ঘোষণা করেন। প্রথম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠা দিবসই টাইগার্স ডে হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

 

এ রেজিমেন্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সর্ববৃহৎ যোদ্ধা দল। এ রেজিমেন্টের রয়েছে গৌরব উজ্জল ইতিহাস। সমরে ও শান্তিতে এ রেজিমেন্টের সদস্যগণ কারো থেকে পিছিয়ে নেই।

 

১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে সবচেয়ে বেশী পদক প্রাপ্তির তুলনাহীন রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল এ রেজিমেন্ট। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধেও এ রেজিমেন্ট সাহসিকতা ও সাফল্যের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধে এ রেজিমেন্টের অগনিত সদস্য আত্মত্যাগ করেছেন। সাত বীর শ্রেষ্ঠের দুই জন লালন করছে এ রেজিমেন্ট। এ রেজিমেন্টের সদস্যবৃন্দ দেশের যে কোন প্রয়োজনে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত।

 

আমরা শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করছি এ রেজিমেন্টের সে সকল বীর যোদ্ধাদের যাদের অকুতোভয় প্রচেষ্টা ও আত্মত্যাগ এ রেজিমেন্টকে মহিমান্বিত করেছে। এখন আমরা এ রেজিমেন্টের সকল সদস্যের সুখ ও সমৃদ্ধি এবং উত্তরোত্তর উন্নতি কামনা করে ও শহীদদের মাগফিরাত কামনা করে মহান প্রভুর দরবারে দুআ করবো।

 

তাই আমরা এখন প্রত্যেকেই মনে মনে পাঠ করবোঃ

ক। সূরা ফাতিহা ০১ বার

খ। সূরা ইখলাস ০৩ বার

গ। দরুদ শরীফ ০১ বার

 

 

 

মোনাজাত

১।

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿البقرة: ٢٠١﴾

২। হে আল্লাহ! আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি ৭৬তম টাইগার্স ডে। এ দিনে ফযর সালাতের পর আমাদের তিলাওয়াত, দোয়া-মোনাজাত এবং নেক আমল সমূহ কবুল করুন। আমাদের কৃত নেক আমল সমূহের ছওয়াব বহুগুন বৃদ্ধি করে মহানবী (সাঃ) এর রওজা পাকে পৌছে দিন।

 

রাব্বাল আলামীন! দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল টাইগার্স বাহিনী। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে আপনার দয়ায় তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছে, এ জন্য আমরা আপনার নিকট শোকরিয়া জ্ঞাপন করছি। আলহামদুলিল্লাহ

 

ইয়া আল্লাহ্! ভবিষ্যতে যাতে এই টাইগার্স বাহিনীর সকল সামরিক / অসামরিক সদস্য তাদের উপর অর্পিত দায়িত্বগুলো সুষ্ঠ, সুন্দর, সুচারুভাবে এবং সম্মান, মর্যাদা, দক্ষতা, আমানত ও সাফল্যের সাথে সুসম্পন্ন করতে পারে সে তৌফিক দান করুন।

 

রাব্বাল আলামীন! মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এ বাহিনীর যে সব সদস্যগণ শাহাদাত বরণ করেছেন তাদেরকে মাফ করে দিন। তাদের আত্মতাগকে কবুল করে নিন, তাদেরকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন।

 

এ ছাড়াও বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যারা এর উন্নতি ও অগ্রগতিতে অবদান রেখেছেন, যাদের ত্যাগ, তিতিক্ষা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে উন্নতি লাভ করেছে। তাদের সবাইকে মাফ করে দিন। তাদের মহৎ উদ্যোগকে কবুল করে নিন।

 

তাদের মধ্যে যারা বেঁচে আছেন তাদেরকে উন্নত জীবন দান করুন। বর্তমানে যারা বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত, নিয়োজিত আছেন তাদের জান-মাল, পরিবার-পরিজনদের হিফাজত করুন। তাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ রেজিমেন্টের উত্তরোত্তর উন্নতি দান করুন। প্রত্যেকের দায়িত্ব সততার সাথে পালন করার তৌফিক দান করুন। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার তৌফিক দান করুন। যারা অসুস্থ আছেন তাদেরকে সুস্থতা দান করুন।

 

ইয়া আল্লাহ্! এই বেঙ্গল রেজিমেন্টের জ্ঞান বিতরন পদ্ধতি এবং সকল কার্য পরিচালনা যেন বাংলাদেশ সেনাবহিনীর জন্য মাইল ফলক হয়ে থাকে সেই তৌফিক দান করুন। এর ব্যক্তি, বস্তু ও তথ্যের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয় সে ব্যবস্থা দান করুন।

 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল নিয়ম কানুন বিশেষ করে পরস্পরের মাঝে হৃদ্যতা, মমতাবোধ ও একতার মনোবল নিয়ে আগত দিনের কর্মকান্ড সফলতার সহিত পালনের তৌফিক দান করুন।

 

বিগত দিনের ভাল কাজের গতি অব্যাহত রাখুন। যারা এ কাজে নেতৃত্ব দিয়ে পৃষ্টপোশকতা করছেন, তাদেরকে সঠিক পরিকল্পনা ও দূরদর্শী কলা-কৌশল গ্রহন করার তৌফিক দান করুন।

 

আমাদের দেশ ও জাতিকে একটি উন্নত দেশ ও জাতি হিসেবে পরিগণিত হওয়ার তৌফিক দান করুন।

 

আমাদের শারিরীক, মানসিক, সুস্থ্যতা দান করুন। যাবতীয় ক্লান্তি, অবসাদ দূর করুন। আমাদের সাহস, মনোবল বৃদ্ধি করুন। যাবতীয় দূর্বলতা, ভিরুতা, অকল্যাণ, অমঙ্গল দূর করুন। আমাদের পারদর্শীতা, উৎকর্ষতা, গতিশীলতা বৃদ্ধি করুন। যাবতীয় বিপদাপদ, বালা-মসিবত, বাধা-বিপত্তি ও দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে হিফাযত করুন। আমাদের উপর আপনার খাছ রহমত নাযিল করুন। আমিন!!

 

১৬ ফেব্রুয়ারি (মৃ:১৯৮৪ ইং) জেনারেল এম এ জি ওসমানীর মৃত্যু বার্ষিকী

আজ ১৬ ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সাল। বাংলাদেশের অকুতোভয় বীর সেনানী ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সর্বাধিনায়ক জেনারেল মোহাম্মাদ আতাউল গনি ওসমানীর ৩৯তম মৃত্যু বার্ষিকী।  এ দিনে আমরা তাকে স্বরন করে এই মহান ব্যক্তিত্বের রুহের মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহ্ তাআলার কাছে বিশেষ প্রার্থনা করবো।

 

বাংলাদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ইন চীফ জেনারেল এম এ জি ওসমানী ১৯১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের বর্তমান সুনামগঞ্জ জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৩৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ক্যাডেট হিসেবে ব্রিটিশ-ভারত সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। কৃতিত্বের সাথে প্রশিক্ষণ শেষ করে ১৯৪০ সালে কমিশন লাভ করেন। মেধা ও দক্ষতার গুনে ১৯৪১ সালে ক্যাপ্টেন এবং ১৯৪২ সালে মাত্র তেইশ বছর বয়সে তিনি মেজর পদবী লাভ করেন। তদানিন্তন বৃটিশ ভারতীয় সেনাবহিনীতে তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ মেজর। বাঙ্গালী হয়ে এত অল্প বয়সে মেজর পদে পদোন্নতি তাকে বিশেষ মর্যাদা ও পরিচিতি প্রদান করে। মেজর পদে তিনি একটি যান্ত্রিক পরিবহন ব্যাটালিয়নের অধিনায়কত্ব করে এক গৌরবময় ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ভারত বিভক্তির পর ১৯৪৭ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবহিনীতে লেঃ কর্ণেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

 

বৃটিশ-ভারত ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে একজন চৌকষ অফিসার হিসেবে তার খ্যাতি ছিল অসামান্য। যোগ্যতা ও কর্ম দক্ষতার বলে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ দায়িত্ব পালন করেন। স্বীয় কৃতিত্বের জন্য তিনি ১৯৫০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ইষ্ট বেংগল রেজিমেন্টের প্রথম বাঙ্গালী কমান্ড্যান্ট নিযুক্ত হবার গৌরব অর্জন করেন এবং ১৯৫৫ সালের ৬ জুন পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি কর্ণেন পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

 

জেনারেল ওসমানী বেঙ্গল রেজিমেন্টের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন। পাকিস্তানি শাসক ও সামরিক চক্র বিভিন্ন কুট-কৌশলে বেঙ্গল রেজিমেন্ট ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু জেনারেল ওসমানীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও পৃষ্টপোষকতায় বেঙ্গল রেজিমেন্ট উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যায়। তারই প্রচেষ্টায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে বাঙ্গালী সৈনিকের কোটা দুই থেকে দশ শতাংশে উন্নীত হয়। তার সময়ে বেঙ্গল রেজিমেন্টের ব্যাটালিয়নগুলির সংখ্যা দুই থেকে ছয় এ গিয়ে পৌঁছে।

 

তদানিন্তন কর্ণেল এম এ জি ওসমানী ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সেনাবহিনী হতে অবসর গ্রহণ করেন এবং অবসরে এসে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে বসবাস শুরু করেন। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য (এম এন এ) হিসেবে নির্বাচিত হন।

 

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি মুক্তি বাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত হন। পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীদের উৎখাত করার জন্য তিনি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলস এর বাঙ্গালী অফিসার ও সৈনিকদের নিয়ে তিনি একটি নিয়মিত বাহিনী গঠন করেন। বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটি গেরিলা বাহিনীও তিনি গঠন করেন। অত্যন্ত দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে চৌকষ পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে তিনি মুক্তি বাহিনী ও গেরিলা বাহিনী পরিচালনা করেন।

 

মুক্তিযুদ্ধে তার বীরত্ব ও কৃতিত্ব পূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে পূর্ণাঙ্গ জেনারেল পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেন। ০৭ এপ্রিল ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হতে অবসর গ্রহণ করেন।

 

দি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাথে মরহুম জেনারেল ওসমানীর ছিল নিবিড় সম্পর্ক। অবসর জীবনেও তিনি এই রেজিমেন্টের উন্নয়নে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতেন। ১৯৮৪ সালে বার্ধক্য ও রোগাক্রান্ত হয়ে বেশকিছু দিন সি এম এইচ ঢাকা সেনানিবাসে চিকিৎসাধীন থাকার পর উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাঁকে লন্ডনের একটি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অবশেষে উক্ত হাসপাতালেই তিনি ১৯৮৪ সালের ১৬ ই ফেব্রুয়ারি তারিখে ৬৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে সিলেটে হযরত শাহ জালাল (রঃ)-এর মাজার প্রাঙ্গনে তাকে সমাহিত করা হয়।

 

সমগ্র দেশবাসি তথা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিকট জেনারেল ওসমানী ছিলেন অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব। বিশেষ করে দি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্যদের নিকট তার পৃথক পরিচয় ও অবদানের ফলশ্রুতিতে তিনি বিশেষভাবে স্বরণীয় হয়ে রয়েছেন। আমরা সকলে তার আত্মার চির শান্তির জন্যে মহান আল্লাহ্ নিকট বিশেষ প্রার্থনা করবো।

 

তাই আমরা এখন প্রত্যেকেই মনে মনে পাঠ করবোঃ

ক। সূরা ফাতিহা ০১ বার

খ। সূরা ইখলাস ০৩ বার

গ। দরুদ শরীফ ০১ বার

 

 

 

মোনাজাত

১।

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿البقرة: ٢٠١﴾

رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ ﴿الأعراف: ٢٣﴾ 

২। হে আল্লাহ্! ফযর সালাতের পর আমরা আপনার নিটক প্রার্থনা করছি। আমাদের নামায, তিলাওয়াত, দোয়া-মোনাজাত এবং নেক আমল সমূহ কবুল করুন। এ অসিলায় আমাদের সকলের জীবনের তামাম গুনাহ গুলো মাফ করে দিন। এর যা সাওয়াব হয় তা অসংখ্য গুণ বৃদ্ধি করে দিয়ে আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ)-এর আরওয়াহ মোবারকে পৌছিয়ে দিন।

 

৩। তামাম বিশ্বের যত মুমিন-মুমিনাত ইন্তেকাল করেছেন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যত সদস্য শাহাদত বরণ করেছেন সকলের আরওয়াহ মোবারকে এর সাওয়াব পৌছিয়ে দিন। বিশেষ করে আমাদের সকলের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি ও ১৯৭১ সালের মুক্তি যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী রুহের উপর এর সওয়াব পৌছিয়ে দিন।

 

৪। ইয়া রাব্বাল আলামীন ! আজকের এ দিবসে আমরা পরম শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছি এবং আপনার নিকট তাঁর আত্মার মাগফেরাত ও সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করছি। মেহেরবাণী করে তার জীবনের যাবতীয় ভূল- ত্রুটি মাফ করে শাহাদাতের পরিপূর্ণ মর্যাদা দান করুণ। তার জীবনের সকল গুনাহ গুলো মাফ করে দিন। কিয়ামত পর্যন্ত কবর আযাব মাফ করে দিন। অন্ধকার কবরকে দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দিন। অন্ধকার কবরকে ঈমানী নূরে আলোকিত করে দিন। তার কবরকে জান্নাতের টুকরায় পরিণত করে দিন। বিনা হিসাবে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করে দিন। তার পরকালীন জীবনকে শান্তিময় করে দিন।

 

৫। হে আল্লাহ ! তাদের ত্যাগ ও প্রচেষ্টায় আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি তা কিয়ামত পর্যন্ত অক্ষুন্ন রাখুন। এ প্রিয় জন্মভূমির ভালবাসায় এবং স্বাধীনতা ও সার্বোভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার জন্য সবাইকে শান্তির পরশে থেকে দেশের কল্যাণার্থে এক যোগে কাজ করার তৌফিক দান করুণ।

 

৬। ইয়া পরওয়ারদিগারে আলম ! তিনার পরিবারের সদস্যদেরকে উত্তম ধৈর্য্য ধারণ করার তৌফিক দান করে দিন। তিনার পরিবারের সকল সদস্যদেরকে সুন্দর জীবন ও জীবিকা নসিব করুন। তিনার পরিবারের উপর আপনার খাছ রহমত, বরকত ও সাহায্য দান করুন। তাদেরকে যাবতীয় বিপদ, আপদ ও বালা-মসিবত থেকে হিফাযত করুণ। তাদেরকে সম্মানজনক জীবন-জীবিকা দান করুণ।

 

হে আল্লাহ্ আমাদের ভুল ত্রুটি মাফ করে দিন। আপনার সুন্দর সুন্দর নামের অসিলায় আমাদের আজকের দোয়া ও মোনাজাতকে কবুল আর মুঞ্জুর করে নিন।

 

رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ﴿البقرة: ١٢٧﴾ وَتُبْ عَلَيْنَا إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ ﴿البقرة: ١٢٨﴾

رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا﴿الإسراء: ٢٤﴾

 


No comments:

Post a Comment