Saturday, March 4, 2023

পুরুষ ও নারীর নামায পদ্ধতি এক নয়

بسم الله الرحمن الرحيم ভূমিকা নারী পুরুষের শারীরিক গঠন, সক্ষমতা, নিরাপত্তা ইত্যাদী নানা বিষয়ে যেমন পার্থক্য রয়েছে, তেমনি পার্থক্য রয়েছে ইবাদতসহ শরীয়তের অনেক বিষয়ে। যেমন- ১-পুরুষ ও মহিলা উভয়ের উপরই হজ্ব ফরয। কিন্তু মহিলাদের জন্য পথ খরচ ছাড়াও হজ্বের সফরে স্বামী বা মাহরাম পুরুষের উপস্থিতি শর্ত। ২-ইহরাম অবস্থায় পুরুষের জন্য মাথা ঢাকা নিষেধ। অথচ মহিলাদের জন্য ইহরাম অবস্থায় মাথা ঢেকে রাখা ফরয। ৩-ইহরাম খোলার সময় পুরুষ মাথা মুন্ডায়। কিন্তু মহিলাদের মাথা মুন্ডানো নিষেধ। ৪-হজ্ব পালনকালে পুরুষ উচ্চ আওয়াজে তালবীয়া পাঠ করে, পক্ষান্তরে মহিলাদের জন্য নিম্ন আওয়াজে পড়া জরুরী। ৫-পুরুষের উপর জুমআ পড়া ফরয, মহিলাদের উপর নয়। ৬-নামাযে সতর্ক করার মত কোন ঘটনা ঘটলে সতর্ক করার জন্য পুরুষের তাসবীহ পড়ার হুকুম করা হয়েছে। কিন্তু মহিলাদের তাসফীক করা তথা হাতে শব্দ করার বিধান। ৭-ইমাম ও খতীব শুধু পুরুষই হতে পারে, কোন নারী হতে পারেনা। ৮-আজান শুধু পুরুষই দিবে, কোন নারীকে মুয়াজ্জিন বানানো জায়েজ নয়। ৯-পুরুষের জন্য মসজিদে গিয়ে জামাআতে নামায পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। আর মহিলাদের ঘরে নামায পড়াই উত্তম বলা হয়েছে। ১০-সতর। পুরুষের সতর হল নাভি থেকে হাটু পর্যন্ত। আর পরপুরুষের সামনে নারীদের সতর হল প্রায় পুরো শারীরই ঢেকে রাখা ফরয। নারী-পুরুষের মাঝে এরকম পার্থক্যসম্বলিত ইবাদত সমূহের অন্যতম হল নামায। তাকবীরে তাহরীমার জন্য হাত উঠানো, হাত বাঁধা, রুকু, সেজদা, প্রথম ও শেষ বৈঠক ইত্যাদী ক্ষেত্রগুলোতে পুরুষের সাথে নারীর পার্থক্য রয়েছে। তাদের সতরের পরিমাণ যেহেতো বেশি তাই যেভাবে তাদের সতর বেশী রক্ষা হয় সেদিকটিও বিবেচনা করা হয়েছে ক্ষেত্রগুলিতে। মুসলিম উম্মাহর প্রায় দেড় হাজার বছরের অবিচ্ছন্ন আমলের ধারা তাই প্রমাণ করে। বিষয়টি প্রমাণিত রাসূলে কারীম সাঃ এর হাদিস, সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীগণের ফতোয়া ও আছারের মাধ্যমে। প্রথমে আমরা সহীহ হাদিস, তারপর পর্যায়ক্রমে সাহাবায়ে কিরাম ও তাবেয়ীদের ফতোয়া ও আছার উল্লেখ করছি। হাদিস ১. 3016 – أخبرناه أبو بكر محمد بن محمد أنبأ أبو الحسين الفسوي ثنا أبو علي اللؤلؤي ثنا أبو داود ثنا سليمان بن داود أنبأ بن وهب أنبأ حيوة بن شريح عن سالم بن غيلان عن يزيد بن أبي حبيب : أن رسول الله صلى الله عليه و سلم مر على امرأتين تصليان فقال إذا سجدتما فضما بعض اللحم إلى الأرض فإن المرأة ليست في ذلك كالرجل (سنن الكبرى للبيهقى، كتاب الحيض، باب ما يستحب للمرأة من ترك التجافي في الركوع والسجود، رقم الحديث-3016) তাবেয়ী ইয়াযীদ বিন আবী হাবীব রহ. বলেন-একবার রাসূল সা. দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে (সংশোধনের উদ্দেশ্য) বললেন-“যখন সেজদা করবে তখন শরীর যমীনের সাথে মিলিয়ে দিবে। কেননা মহিলারা এ ক্ষেত্রে পুরুষদের মত নয়। (সুনানুল বায়হাকী, হাদিস নং-৩০১৬, কিতাবুল মারাসিল লি ইমাম আবু দাউদ-৫৫, হাদিস নং-৮০) প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আলেম নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ “আওনুল বারী” (১/৫২০) তে লিখেছেন-“উল্লেখিত হাদিসটি সকল ইমামদের উসুল অনুযায়ী দলীল হিসেবে পেশ করায় যোগ্য”। মুহাদ্দিস মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল আমীর ইয়ামানী “সুবুলুস সালাম” শরহু বুলুগিল মারাম” গ্রন্থে (১/৩৫১-৩৫২) এই হাদিসকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে পুরুষ ও মহিলার সেজদার পার্থক্য করেছেন। ২. وَالآخَرُ حَدِيثُ أَبِى مُطِيعٍ : الْحَكَمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْبَلْخِىِّ عَنْ عُمَرَ بْنِ ذَرٍّ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- :« إِذَا جَلَسْتِ الْمَرْأَةُ فِى الصَّلاَةِ وَضَعَتْ فَخِذَهَا عَلَى فَخِذِهَا الأُخْرَى ، وَإِذَا سَجَدْتْ أَلْصَقَتْ بَطْنَهَا فِى فَخِذَيْهَا كَأَسْتَرِ مَا يَكُونُ لَهَا ، وَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَنْظُرُ إِلَيْهَا وَيَقُولُ : يَا مَلاَئِكَتِى أُشْهِدُكُمْ أَنِّى قَدْ غَفَرْتُ لَهَا (السنن الكبرى، كتاب الصلاة، باب مَا يُسْتَحَبُّ لِلْمَرْأَةِ مِنْ تَرْكِ التَّجَافِى فِى الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ، رقم الحديث-3324) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছন-“মহিলা যখন নামাযের মধ্যে বসবে তখন যেন (ডান) উরু অপর উরুর উপর রাখে। আর যখন সেজদা করবে তখন যেন পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। যা তার সতরের জন্য অধিক উপযোগী। আল্লাহ তায়ালা তাকে দেখে বলেন-ওহে আমার ফেরেস্তারা! তোমরা সাক্ষী থাক। আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। (সুনানে বায়হাকী-২/২২৩, হাদিস নং-৩৩২৪) এই হাদিসটি হাসান। ৩. حدثنا محمد بن عبد الله الحضرمي قال حدثتني ميمونة بنت عبد الجبار بن وائل بن حجر عن أبيها عبد الجبار عن علقمة عمها عن وائل بن حجر قال : جئت النبي صلى الله عليه و سلم ………….فقال لي رسول الله صلى الله عليه و سلم : يا وائل بن حجر إذا صليت فاجعل يديك حذاء أذنيك والمرأة تجعل يديها حذاء ثدييها (المعجم الكبير، باب الواو، وائل بن حجر الحضرمي القيل، رقم الحديث-28) হযরত ওয়াইল বিন হুজর রা. বলেন। আমি নবীজী সা. এর দরবারে হাজির হলাম। তখন তিনি আমাকে (অনেক কথার সাথে একথাও) বলেছিলেন যে, হে ওয়াইল বিন হুজর! যখন তুমি নামায শুরু করবে তখন কান বরাবর হাত উঠাবে। আর মহিলা হাত উঠাবে বুক বরাবর। (আল মুজামুল কাবীর, হাদিস নং-২৮) এই হাদিসটিও হাসান। উল্লেখিত হাদিসগুলি থেকে একথা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, কিছু কিছু হুকুমের ক্ষেত্রে মহিলার নামায আদায়ের পদ্ধতি পুরুষের নামায আদায়ের পদ্ধতি থেকে ভিন্ন। বিশেষত ২ নং হাদিসটি দ্বারা একথাও বুঝা গেল যে, মহিলার নামায আদায়ের শরীয়ত নির্ধারিত ভিন্ন এই পদ্ধতির মধ্যে ওই দিকটিই বিবেচনায় রাখা হয়েছে যা তার সতরও পর্দার পক্ষে সর্বাধিক উপপোযী। উল্লেখ্য যে, এই সব হাদিসের সমর্থনে মহিলাদের নামায আদায়ের পদ্ধতির পার্থক্য ও ভিন্নতাকে নির্দেশ করে এমন আরো কিছু হাদিস আছে। পক্ষান্তরে এগুলির সাথে বিরোধপূর্ণ একটি হাদীসও কোথাও পাওয়া যাবেনা। যাতে বলা হয়েছে যে, পুরুষ ও মহিলার নামাযের পদ্ধতিতে কোন পার্থক্য নেই। বরং উভয়ের নামাযই এক ও অভিন্ন। একথার পক্ষে একটি হাদীসও নেই। সাহাবায়ে কিরামের ফতোয়া ১. 5072 – عبد الرزاق عن إسرائيل عن أبي إسحاق عن الحارث عن علي قال إذا سجدت المرأة فلتحتفز ولتلصق فخذيها ببطنها (مصنف عبد الرزاق، كتاب الصلاة، باب تكبير المرأة بيديها وقيام المرأة و ركوعها وسجودها، رقم الحيث-5072) হযরত আলী রা. বলেছেন-মহিলা যখন সেজদা করে তখন সে যেন খুব জড়সড় হয়ে সেজদা করে এবং উভয় উরু পেটের সাথে মিলিয়ে রাখে। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক-৩/১৩৮, হাদিস নং-৫০৭২, মুসান্নাফে ইবনে শাইবা-২/৩০৮, হাদিস নং-২৭৯৩, সুনানে কুবরা বায়হাকী-২/২২২) ২. حَدَّثَنَا أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمُقْرِئ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي أَيُّوبَ ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ ، عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ الأَشَجِّ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ؛ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ صَلاَةِ الْمَرْأَةِ ؟ فَقَالَ : تَجْتَمِعُ وَتَحْتَفِزُ. (مصنف ابن ابى شيبة، كتاب الصلاة، في المرأة كَيْفَ تَجْلِسُ فِي الصَّلاَةِ، رقم الحديث-2794) হযরত ইবনে আব্বাস রা. কে জিজ্ঞেস করা হল-মহিলারা কিভাবে নামায আদায় করবে? তিনি বললেন-“খুব জড়সড় হয়ে অঙ্গের সাথে অঙ্গ মিলিয়ে নামায আদায় করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০২, হাদিস নং-২৭৯৪) উপরে মহিলাদের নামায সম্পর্কে দু’জন সাহাবীর যে মত বর্ণিত হল, আমাদের জানা মতে কোন হাদীসগন্থের কোথাও একজন সাহাবী থেকেও এর বিপরীত কিছু বিদ্যমান নেই। রাসূল সা. থেকে সাহাবায়ে কিরাম যে, দ্বীন শিখেছেন তাদের কাছ থেকে তা শিখেছেন তাবেয়ীগণ। তাঁদের ফাতওয়া থেকেও এ কথাই প্রতীয়মান হয় যে,”মহিলাদের নামায পুরুষের নামায থেকে ভিন্ন। নিম্নে তাঁদের মধ্য থেকে প্রসিদ্ধ কয়েকজনের ফাতওয়া উল্লেখ করা হয়। ১. 2486- حدثنا هشيم ، قال : أخبرنا شيخ لنا ، قال : سمعت عطاء ؛ سئل عن المرأة كيف ترفع يديها في الصلاة ؟ قال : حذو ثدييها(مصنف ابن ابى شيبه، كتاب الصلاة، باب من كان يتم التكبير ولا ينقصه في كل رفع وخفض،) হযরত আতা বিন আবী রাবাহ কে জিজ্ঞেস করা হল-“নামাযে মহিলা কতটুকু হাত উঠাবে?” তিনি বললেন-“বুক বরাবর”। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা,-১/২৭০, হাদিস নং-২৪৮৬) ২. 2489- حدثنا محمد بن بكر ، عن ابن جريج ، قال : قلت لعطاء : تشير المرأة بيديها بالتكبير كالرجل ؟ قال : لا ترفع بذلك يديها كالرجل ، وأشار فخفض يديه جدا ، وجمعهما إليه جدا ، وقال : إن للمرأة هيئة ليست للرجل ، وإن تركت ذلك فلا حرج. হযরত ইবনে জুরাইজ রহ. বলেন-“আমি আতা বিন আবী রাবাহকে জিজ্ঞেস করলাম-“মহিলা তাকবীরের সময় পুরুষের সমান হাত তুলবে?” তিনি বললেন-“মহিলা পুরুষের মত হাত তুলবেনা। এরপর তিনি তার উভয় হাত (পুরুষ অপেক্ষা) অনেক নিচুতে রেখে শরীরের সাথ খুব মিলিয়ে রাখলেন এবং বললেন-মহিলাদের পদ্ধতি পুরুষ থেকে ভিন্ন। তবে এমন না করলেও অসুবিধা নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/২৭০, হাদিস নং-২৪৮৯, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক,হাদিস নং-৫০৬৬,৬২৫১) ৩. 2796- حدثنا جرير ، عن ليث ، عن مجاهد ؛ أنه كان يكره أن يضع الرجل بطنه على فخذيه إذا سجد كما تصنع المرأة. হযরত মুজাহিদ বিন জাবর রহ. থেকে বর্ণিত। তিনি পুরুষের জন্য মহিলার মত উরুর সাথে পেট লাগিয়ে সেজদা করাকে অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০২, হাদিস নং-২৮৯৬) ৪. 2487- حدثنا رواد بن جراح ، عن الأوزاعي ، عن الزهري ، قال : ترفع يديها حذو منكبيها. হযরত যুহরী রহ. বলেন-“মহিলা কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/২৭০, হাদীস নং-২৪৮৭) ৫. 5068 – عبد الرزاق عن معمر عن الحسن وقتادة قالا إذا سجدت المرأة فإنها تنضم ما استطاعت ولا تتجافى لكي لا ترفع عجيزتها হযরত হাসান বসরী ও কাতাদা রহ. বলেন-“মহিলা যখন সেজদা করবে তখন সে যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে থাকবে। অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ফাঁকা রেখে সেজদা দিবেনা যাতে কোমড় উঁচু হয়ে না থাকে”। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক-৩/১৩৭, হাদিস নং-৫০৬৮, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০৩) ৬. 2795- حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِِ ، عَنْ مُغِيرَةَ ، عَنْ إبْرَاهِيمَ ، قَالَ : إذَا سَجَدَتِ الْمَرْأَةُ فَلْتَضُمَّ فَخِذَيْهَا ، وَلْتَضَعْ بَطْنَهَا عَلَيْهِمَا.(مصنف ابن ابى شيبة، كتاب الصلاة، في المرأة كَيْفَ تَجْلِسُ فِي الصَّلاَةِ، رقم الحديث-2795) হযরত ইবরাহীম নাখয়ী রহ. বলেন-মহিলা যখন সেজদা করবে তখন যেন সে উভয় উরু মিলিয়ে রাখে এবং পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০২, হাদিস নং-২৭৯৫) ৭. 5071 – عبد الرزاق عن معمر والثوري عن منصور عن إبراهيم قال كانت تؤمر المرأة أن تضع ذراعها وبطنها على فخذيها إذا سجدت ولا تتجافى كما يتجافى الرجل لكي لا ترفع عجيزتها হযরত ইবরাহীম নাখয়ী রহ. আরো বলেন-“মহিলাদের আদেশ করা হত তারা যেন সেজদা অবস্থায় হাত ও পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। পুরুষের মত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফাঁকা না রাখে। যাতে কোমড় উঁচু হয়ে না থাকে। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক-৩/১৩৭, হাদিস নং-৫০৭১) ৮. 2799- حَدَّثَنَا إسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ ، عَنْ زُرْعَةَ بْنْ إِبْرَاهِيمَ ، عَن خَالِدِ بْنِ اللَّجْلاَجِ ، قَالَ : كُنَّ النِّسَاءُ يُؤْمَرْنَ أَنْ يَتَرَبَّعْنَ إذَا جَلَسْنَ فِي الصَّلاَةِ ، وَلاَ يَجْلِسْنَ جُلُوسَ الرِّجَالِ عَلَى أَوْرَاكِهِنَّ ، يُتَّقي ذَلِكَ عَلَى الْمَرْأَةِ ، مَخَافَةَ أَنْ يَكُونَ مِنْهَا الشَّيءُ. হযরত খালেদ বিন লাজ্জাজ রহ. বলেন-“মহিলাদেরকে আদেশ করা হত যেন নামাযে দুই পা ডান দিক দিয়ে বের করে নিতম্বের উপর বসে। পুরুষদের মত না বসে। আবরণযোগ্য কোন কিছু প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার আশংকায় মহিলাদেরকে এমনি করতে হয়। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০৩, হাদিস নং-২৭৯৯) উল্লেখিত বর্ণনাগুলি ছাড়াও আয়িম্মায়ে তাবেয়ীনের আরো কিছু বর্ণনা এমন আছে যা মহিলা-পুরুষের নামাযের পার্থক্য নির্দেশ করে। পক্ষান্তরে একজন তাবেয়ী থেকেও এর বিপরীত বক্তব্য প্রমাণিত নয়। চার ইমামের ফিক্বহের আলোকেঃ ফিক্বহে ইসলামীর চারটি সংকলন মুসলিম উম্মাহর মাঝে প্রচলিত। যথা- ১-ফিক্বহে হানাফী ২-ফিক্বহে শাফেয়ী ৩-ফিক্বহে মালেকী ৪-ফিক্বহে হাম্বলী এবার দেখুন এই চার ফিক্বহের ইমামদের মতামত। ১-ফ্বিকহে হানাফী احب الينا ان تجمع رجليها من جانب ولا تنتصب انتصاب الرجل، (كتاب الآثار-1/609) ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর অন্যতম সাগরীদ ইমাম মুহাম্মদ রহঃ বলেন-“ আমাদের নিকট পছন্দনীয় হল, মহিলারা নামাযে উভয় পা একপাশে মিলিয়ে রাখবে। পুরুষের মত এক পা দাঁড় করিয়ে রাখবেনা। {কিতাবুল আসার, ইমাম মুহাম্মদ রহঃ-১/৬০৯} روى امامنا الأعظم عن نافع عن ابن عمر رضى الله عنهما أنه سئل كيف كان النساء يصلين على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم؟ قال كن يتربعن أمرن أن يحتفزن، أخرجه أبو محمد الحارثى والأشنانى وابن خسرو من طريقه عن سفيان الثورى عنه، راجع جامع الماسانيد-1/400، وهذا أقوى واحسن ما روى فى هذا الباب، ولذا احتج به امامنا وجعله مذهبه وأخذ به، আমাদের ইমামে আজম আবু হানীফা রঃ নাফে রহঃ থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন-“হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ কে জিজ্ঞেস করা হল-“রাসূল সাঃ এর যুগে মহিলারা কিভাবে নামায পড়তেন?” তিনি বললেন-“আগে তারা চারজানু হয়ে বসতেন, পরে তাদেরকে জড়সড় হয়ে বসতে বলা হয়েছে”। {জামেউল মাসানিদ-১/৪০০} উক্ত হাদিসটি এ বিষয়ে বর্ণিত সবকিছুর চেয়ে শক্তিশালী। এ কারণেই আমাদের ইমাম এর দ্বারা দলীল পেশ করেছেন। এ অনুযায়ী আমল করেছেন। এবং এটিকে নিজের মাযহাব বানিয়েছেন। {কিতাবুল আসার এর টিকা-১/৬০৭} মহিলাদের ক্ষেত্রে পার্থক্যের বর্ণনা হানাফী ফিক্বহের কিতাবে দেখুন- ১-বাদায়িউস সানায়ে-১/৪৬৬ ২-হেদায়া-১/১০০-১১০ ৩-আল মাবসূত লিস সারাখসী-১/৪৬৬ ৪-ফাতওয়ায়ে শামী-১/৫০৪ ৫-ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-১/৭৩-৭৫ ২-ফিক্বহে শাফেয়ী ( قال الشافعي ) وقد أدب الله تعالى النساء بالاستتار وأدبهن بذلك رسوله صلى الله عليه وسلم وأحب للمرأة في السجود أن تضم بعضها إلى بعض وتلصق بطنها بفخذيها وتسجد كأستر ما يكون لها وهكذا أحب لها في الركوع والجلوس وجميع الصلاة أن تكون فيها كأستر ما يكون لها (كتاب الأم، باب الذكر في السجود) ইমাম শাফেয়ী রহঃ বলেন-“আল্লাহ পাক মহিলাদেরকে পুরোপুরি আবৃত থাকার শিক্ষা দিয়েছেন। তার রাসূল সাঃ ও অনুরূপ শিক্ষা দিয়েছেন। তাই আমার নিকট পছন্দীয় হল-সেজদা অবস্থায় মহিলারা এক অঙ্গের সাথে অপর অঙ্গ মিলিয়ে রাখবে। পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখবে। আর সেজদা এমনভাবে করবে যাতে সতরের চূড়ান্ত হেফাযত হয়। অনুরূপ রুকু, বৈঠক ও গোটা নামাযে এমনভাবে থাকবে যাতে সতরের পুরোপুরি হেফাযত হয়। {কিতাবুল উম্ম-১/১৩৮) ৩-ফিক্বহে মালেকী মালেকী মাযহাবের প্রসিদ্ধ ফক্বীহ ইমাম আবুল আব্বাস আল কারাফী রঃ ইমাম মালিক রহঃ এর মত উল্লেখ করেন- وأما مساواة النساء للرجال ففي النوادر عن مالك تضع فخذها اليمنى على اليسرى وتنضم قدر طاقتها ولا تفرج في ركوع ولا سجود ولا جلوس بخلاف الرجل নামাযে মহিলা পুরুষের মত কিনা? এ বিষয়ে ইমাম মালিক রহঃ থেকে বর্ণিত। মহিলা ডান উরু বাম উরুর উপর রাখবে এবং যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে বসবে। রুকু সেজদা ও বৈঠকে কোন সময়ই ফাঁক ফাঁক হয়ে বসবেনা। পক্ষান্তরে পুরুষের পদ্ধতি হল ভিন্ন। {আয যাখীরা-২/১৯৩} ৪-ফিক্বহে হাম্বলী ইমাম আহমদ রহঃ এর ফাতওয়া উল্লেখ আছে ইমাম ইবনে কুদামা রহঃ এর আল মুগীনী কিতাবে। فأما المرأة فذكر القاضي فيها روايتين عن أحمد إحداهما ترفع لما روى الخلال بإسناده عن أم الدرداء وحفصة بنت سيرين أنهما كانتا ترفعان أيديهما وهو قول طاوس ولأن من شرع في حقه التكبير شرع في حقه الرفع كالرجل فعلى هذا ترفع قليلا قال أحمد رفع دون الرفع والثانية لا يشرع لأنه في معنى التجافي ولا يشرع ذلك لها بل تجع نفسها في الركوع والسجود وسائر صلاتها তাকবীরের সময় মহিলারা হাত উঠাবে কি উঠাবে না? এ বিষয়ে কাজী [আবু ইয়াজ] ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ থেকে দু’টি মত উল্লেখ করেছেন। প্রথম মত হল হাত উঠাবে। কেননা খাল্লাল হযরত উম্মে দারদা এবং হযরত হাফসা বিন সীরীন থেকে সনদসহ বর্ণনা করেন যে, তারা হাত উঠাতেন। ইমাম তাউসের বক্তব্যও তাই। উপরন্তু যার ব্যাপারে তাকবীর বলার নির্দেশ রয়েছে তার ব্যাপারে হাত উঠানোরও নির্দেশ রয়েছে। যেমন পুরুষ করে থাকে। এ হিসেবে মহিলারাও হাত উঠাবে। তবে সামান্য। আহমাদ রহঃ বলেন-“তুলনামূলক কম উঠাবে”। দ্বিতীয় মত হল-“মহিলাদের জন্য হাত উঠানোরই হুকুম নাই। কেননা হাত উঠালে কোন অঙ্গকে ফাঁক করতেই হয়, অথচ মহিলাদের জন্য এর বিধান দেওয়া হয়নি। বরং তাদের জন্য নিয়ম হল রুকু সেজদাসহ পুরো নামাযে নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখবে। {আল মুগনী-২/১৩৯} আলোচনার এই পর্যায়ে হাদীস, আসারে সাহাবা, তাবেয়ীন ও চার মাযহাবের ইমামদের ঐক্যমত্যের প্রমাণ পেশ করার পর আমরা দেখব আমাদের যে গায়রে মুকাল্লিদ ভাইয়েরা মহিলাদের নামাযের ভিন্ন বিষয়টিকে উপেক্ষা করেন এবং পুরুষ ও মহিলার নামাযের অভিন্ন পদ্ধতির পক্ষে কথা বলেন, তাদের আলেমগণ এ বিষয়ে কি বলেন? তারা কি ফাতওয়া দিয়েছেন? গায়রে মুকাল্লিদ আলেমগণের ফাতওয়া মহিলাদের নামাযের পদ্ধতিতে ইতোপূর্বে যা কিছু উল্লেখ করা হল তথা হাদিস, আসারে সাহাবা, তাবেয়ীনদের ইজমা, এবং চার ইমামের ঐক্যমত্বের আলোকে যুগ যুগ ধরে অবিচ্ছন্ন সূত্র পরম্পরায় যেই পার্থক্যের আমল চলে আসছে, সেটাকে গায়রে মুকাল্লিদদের নেতৃস্থানীয় আলেমগণও স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং সেই আলোকে ফাতওয়া দিয়েছেন। # মাওলানা মুহাম্মদ দাউদ গযনবী রঃ এর পিতা আল্লামা আব্দুল জাব্বার গযনবী রহঃ কে যখন জিজ্ঞেস করা হল-“মহিলাদের নামাযে জড়সড় হয়ে থাকা কি উচিত?” জবাবে তিনি একটি হাদিস উল্লেখ করার পর লেখেন-“এর উপরই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের চার মাযহাব ও অন্যান্যের মাঝে আমল চলে আসছে”। এরপর তিনি চার মাযহাবের কিতাবের উদ্ধৃতি প্রদান করার পর লিখেন-“মোটকথা মহিলাদের জড়সড় হয়ে নামায পড়ার বিষয়টি হাদীস ও চার মাযহাবের ইমামগণ ও অন্যান্যের সর্বসম্মত আমলের আলোকে প্রমাণিত। এর অস্বিকারকারী হাদীসের কিতাবসমূহ ও উম্মতে মুসলিমার সর্বসম্মত আমল সম্পর্কে বেখবর ও অজ্ঞ”। (ফাতওয়ায়ে গযনবীয়্যা-২৭-২৮, ফাতওয়ায়ে ওলামায়ে আহলে হাদিস—৩/১৪৮-১৪৯, মাযমুয়ায়ে রাসায়েল-মাওলানা মুহাম্মদ আমীন সফদর-১-৩১০-৩১১) মাওলানা আলী মুহাম্মদ সাঈদ সাহেব “ফাতওয়ায়ে ওলামায়ে আহলে হাদিস” এ এই পার্থক্যের কথা স্বীকার করেছেন। (মাজমুয়ায়ে রাসায়েল-১/৩০৫) আলবানী সাহেবের অসার বক্তব্য আশ্চর্যের কথা হল, উপরোল্লিখিত দলীলসমূহ এবং উম্মতের মাঝে নববী যুগ থেকে পর্যায়ক্রমে চলে আসা এই সর্বসম্মত আমলের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আলবানী সাহেব তাঁর “সিফাতুস সালাতে” ঘোষণা দিয়ে দিলেন যে, “পুরুষ ও মহিলার নামাযের পদ্ধতি এক”। কিন্তু এই দাবির পক্ষে তিনি না কোন আয়াত পেশ করেছেন, না কোন হাদিস। আর কোন সাহাবী বা তাবেয়ীর ফাতওয়া। এহেন বক্তব্যের ভিত্তি তিনি শুধু এটাকেই বানিয়েছেন যে, পুরুষ ও মহিলার নামাযের পদ্ধতিগত পার্থক্যের ব্যাপারে কোন সহীহ হাদিস নাই। অথচ তার এই দাবি প্রমাণ করার জন্য উচিত ছিল উপরোল্লিখিত দলিল সমূহ বিশ্লেষণ করা। কিন্তু তিনি তা না করে কেবল পার্থক্য সম্বলিত একটি হাদীসকে {যা বক্ষ্যমান নিবন্ধে উল্লেখিত হয়েছে} শুধু এ কথা বলে যয়ীফ বলে আখ্যা দিয়েছেন যে, হাদীসটি ‘মুরসাল’। আর মুরসাল হওয়ায় এটি দুর্বল। এ ছাড়া অন্য কোন আলোচনাই তিনি দলীল সম্পর্কে করেননি। কিন্তু তার এই কথাটি এক গুয়েমি ছাড়া কিছু নয়। কারণ মুহাদ্দীসীনে কিরামের নিকট হাদিস মুরসাল হলেই তা অগ্রহণীয় হয়ে যায়না। কেননা প্রথমত আয়িম্মায়ে দ্বীনের অধিকাংশের মতে বিশেষত স্বর্ণযুগের ইমামগণের নিকট যদি প্রয়োজনীয় শর্তাবলী উপস্থিত থাকে। তাহলে মুরসাল হাদিসও সহীহ হাদিসের মত গ্রহণযোগ্য। দ্বিতীয়ত: যে ইমামগণের নিকট ‘মুরসাল” হাদীসকে সহীহ বলার ব্যাপারে দ্বিধা রয়েছে তারাও মূলত কিছু শর্তের সাথে মুরসাল হাদীসকে দলীল হিসেবে পেশ করার উপযোগী মনে করেন। প্রবন্ধের শুরুতে বর্ণিত মুরসাল বর্ণনাটিতেও সেসব শর্ত বিদ্যমান রয়েছে। যার কারণে গায়রে মুকাল্লিদদের বিখ্যাত আলেম ও মুহাদ্দিস নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান “আউনুল বারী”-(১/৫২০ দারুর রাশীদ, হালাব সিরিয়া) তে লিখেছেন-“এই মুরসাল হাদীসটি সকল ইমামের উসূল ও মূলনীতি অনুযায়ী দলীল হওয়ার যোগ্য”। তার পূর্ণ বক্তব্যটি দেখুন আওনুল বারী-২/১৫৯, পুরুষ মহিলার নামাযের পার্থক্য নেই প্রমাণ করতে আলবানী দ্বিতীয় যে কাজটি করেছেন তা খুবই গর্হিত। সেটা হল তিনি ইবরাহীম নাখয়ী রহঃ নাকি বলেছেন-“মহিলা পুরুষের মতই নামায আদায় করবে”। এই কথাটি নাকি মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাতে আছে। অথচ সেই কিতাবের কোথাও এই উক্তিটি নাই। আল্লাহই ভাল জানেন তিনি কি করে এই কথা বলতে পারলেন!! অথচ ইতোপূর্বে মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবার একাধিক বর্ণনা সহীহ সনদে ইবরাহীম নাখয়ী থেকে উদ্ধৃত হয়েছে। যেখানে ইবরাহীম নাখয়ী রহঃ স্পষ্টই মহিলা পুরুষের নামাযের পার্থক্যের কথা বলেছেন। আলবানী সাহেব তার নিজের দাবী প্রমাণ করার জন্য তৃতীয় আরেকটি কাজ করেছেন। সেটা হল-ইমাম বুখারী রহঃ এর রিজালশাস্ত্রেরে একটি কিতাব “তারীখে সগীর” থেকে নিম্নোক্ত বর্ণনাটি পেশ করেছেন- عن ام الدرداء انها كانت تجلس فى الصلاة جلسة الرجل- “উম্মে দারদা থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি নামাযে পুরুষের মত বসতেন”। আলবানী সাহেব খেয়াল করতে পারেননি যে, এই বর্ণনাটি দ্বারা নামাযে পুরুষ ও মহিলার বসার ভিন্নতাই প্রমাণ হয়। এক হওয়া নয়। যদি উভয় বসার পদ্ধতি এক হত, তাহলে “পুরুষের মত বসা” কথাটির কোন অর্থ থাকেনা। তাই এই কথা থেকে এটি বুঝা যায় যে, সেই যমানায় পুরুষদের মত মহিলারা বসতনা। কিন্তু তিনি যেহেতো ভিন্নভাবে বসতেন তাই এটি ইতিহাসের বর্ণনায় চলে এসেছে। আরেকটি মজার ব্যাপার হল। উম্মে দারদা হলেন একজন তাবেয়ী। তিনি ৮০ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন। তাবেয়ীর বক্তব্য দ্বারা আলবানী সাহেব দলীল পেশ করলেন। অথচ তিনিই আমাদের বর্ণিত প্রথম হাদিসটি মুরসাল বলে প্রত্যাখ্যান করলেন। আশ্চর্য ব্যাপার!! সুতরাং যদি নামাযের পদ্ধতি বর্ণনার ক্ষেত্রে তাবেয়ীর আমল দলীল হয়ে থাকে (আসলে কথা এটাই, অর্থাৎ তাবেয়ীর কথা দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য) তাহলে ইতোপূর্বে বিখ্যাত একাধিক তাবেয়ী ইমামগণের উদ্ধৃতিতে মহিলাদের নামাযের পদ্ধতির ভিন্নতার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা গেছে। এবং একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, আয়িম্মায়ে তাবেয়ীদের তালীম ও শিক্ষা অনুযায়ী রুকু সেজদা, ও বৈঠকসহ অনেক ক্ষেত্রে মহিলাদের নামায পদ্ধতি পুরুষ থেকে ভিন্ন ছিল। এক্ষেত্রে শুধু একজন তাবেয়ী মহিলার ব্যক্তিগত আমলকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করাটা কিছুতেই যুক্তিযুক্ত হতে পারেনা। বিশেষ করে যখন যখন ঠিক এই বর্ণনাটির মাঝেই সুষ্পষ্ট একথার ইংগিত রয়েছে যে, এ ক্ষেত্রে এ মহিলা অন্য সাহাবী ও তাবেয়ী মহিলা থেকে সম্পুর্ণ ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছিলেন। সুতরাং বুঝা গেল নামাযের মাঝে বিভিন্ন বিষয়ে মহিলারা পুরুষদের থেকে আলাদা এটাই দলীল দ্বারা প্রমাণিত। গায়রে মুকাল্লিদ ভাইদের বক্তব্যটির কোন দলিল নেই। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সত্যকে সত্য হিসেবে মেনে নেবার তৌফিক দান করুন। আমীন। বিঃদ্রঃ উপরোক্ত লেখাটি উস্তাদে মুহতারাম আল্লামা আব্দুল মতীন দা.বা. এর অনবদ্য গ্রন্থ “দলীলসহ নামাযের মাসায়েল” নামক গ্রন্থ থেকে সংগ্রহকৃত।

Monday, February 27, 2023

কুইজ নং-১৯

Friday, February 24, 2023

কুইজ নং-১৮

Wednesday, February 22, 2023

আমাদের কোর্স সম্পর্কে আপনার মতামত লিখুন।

Tuesday, February 21, 2023

২০ ক্লাসে আরবি কুরআনের ভাষা শিক্ষা বই

Monday, February 20, 2023

কুইজ নং-১৭

 

২০ ক্লাসে আরবি কুরআনের ভাষা শিক্ষা

Sunday, February 19, 2023

ঘরে বসে ২০ ক্লাসে আরবি কুরআনের ভাষা শিক্ষা

Friday, February 17, 2023

কুইজ নং-১৬

Tuesday, February 14, 2023

১৫ ফেব্রুয়ারি ৭৬তম ‘টাইগার্স ডে’ ২০২৩ এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি (মৃ:১৯৮৪ ইং) জেনারেল এম এ জি ওসমানীর ৩৯তম মৃত্যু বার্ষিকী

 ১৫ ফেব্রুয়ারি টাইগার্স ডে ২০২৩

আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি (২০২৩) সাল। বাংলাদেশের সামরিক ইতিহাসে একটি গৌরব উজ্জল দিন। ১৯৪৮ সালের এই তারিখে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১ম ব্যাটালিয়ন সিনিয়র টাইগার এর প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাঙ্গালী জাতির পৃথক সামরিক সত্তা দি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের গোড়া পত্তন ঘটে। ঐতিহ্যবাহী এ রেজিমেন্টের আজ (৭৬) তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী।

 

দি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট উলে­খ করতে হলে বলতে হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী দুটি বাঙ্গালী মুসলিম পাইওনিয়ার কোম্পানী নিয়ে মেজর গনির অফুরন্ত উদ্যোগে প্রথম এ রেজিমেন্টের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠনে পাকিস্তান সরকারের অনুমোদন লাভের পর মুসলিম পাইওনিয়ার কোম্পানী নং ১২৫৬ ও ১৪০৭ এর অধিনায়ক মেজর এম এ গনি এবং ক্যাপ্টেন এস ইউ খান, ১৯৪৭ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকার কুর্মিটোলায় একত্রিত হয়ে নিজেদের কোম্পানীদ্বয়কে পূর্ণ গঠিত করে মেজর গণির অধিনায়কত্ত্বে ১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের গোড়া পত্তন করেন। পরবর্তিতে ১৯৪৮ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারি এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকার কুর্মিটোলা সেনানিবাসে তদানিন্তন পূর্ব বাংলার গভর্নর স্যার ফ্রেডরিক ১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের জন্ম ঘোষণা করেন। প্রথম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠা দিবসই টাইগার্স ডে হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

 

এ রেজিমেন্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সর্ববৃহৎ যোদ্ধা দল। এ রেজিমেন্টের রয়েছে গৌরব উজ্জল ইতিহাস। সমরে ও শান্তিতে এ রেজিমেন্টের সদস্যগণ কারো থেকে পিছিয়ে নেই।

 

১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে সবচেয়ে বেশী পদক প্রাপ্তির তুলনাহীন রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল এ রেজিমেন্ট। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধেও এ রেজিমেন্ট সাহসিকতা ও সাফল্যের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধে এ রেজিমেন্টের অগনিত সদস্য আত্মত্যাগ করেছেন। সাত বীর শ্রেষ্ঠের দুই জন লালন করছে এ রেজিমেন্ট। এ রেজিমেন্টের সদস্যবৃন্দ দেশের যে কোন প্রয়োজনে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত।

 

আমরা শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করছি এ রেজিমেন্টের সে সকল বীর যোদ্ধাদের যাদের অকুতোভয় প্রচেষ্টা ও আত্মত্যাগ এ রেজিমেন্টকে মহিমান্বিত করেছে। এখন আমরা এ রেজিমেন্টের সকল সদস্যের সুখ ও সমৃদ্ধি এবং উত্তরোত্তর উন্নতি কামনা করে ও শহীদদের মাগফিরাত কামনা করে মহান প্রভুর দরবারে দুআ করবো।

 

তাই আমরা এখন প্রত্যেকেই মনে মনে পাঠ করবোঃ

ক। সূরা ফাতিহা ০১ বার

খ। সূরা ইখলাস ০৩ বার

গ। দরুদ শরীফ ০১ বার

 

 

 

মোনাজাত

১।

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿البقرة: ٢٠١﴾

২। হে আল্লাহ! আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি ৭৬তম টাইগার্স ডে। এ দিনে ফযর সালাতের পর আমাদের তিলাওয়াত, দোয়া-মোনাজাত এবং নেক আমল সমূহ কবুল করুন। আমাদের কৃত নেক আমল সমূহের ছওয়াব বহুগুন বৃদ্ধি করে মহানবী (সাঃ) এর রওজা পাকে পৌছে দিন।

 

রাব্বাল আলামীন! দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল টাইগার্স বাহিনী। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে আপনার দয়ায় তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছে, এ জন্য আমরা আপনার নিকট শোকরিয়া জ্ঞাপন করছি। আলহামদুলিল্লাহ

 

ইয়া আল্লাহ্! ভবিষ্যতে যাতে এই টাইগার্স বাহিনীর সকল সামরিক / অসামরিক সদস্য তাদের উপর অর্পিত দায়িত্বগুলো সুষ্ঠ, সুন্দর, সুচারুভাবে এবং সম্মান, মর্যাদা, দক্ষতা, আমানত ও সাফল্যের সাথে সুসম্পন্ন করতে পারে সে তৌফিক দান করুন।

 

রাব্বাল আলামীন! মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এ বাহিনীর যে সব সদস্যগণ শাহাদাত বরণ করেছেন তাদেরকে মাফ করে দিন। তাদের আত্মতাগকে কবুল করে নিন, তাদেরকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন।

 

এ ছাড়াও বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যারা এর উন্নতি ও অগ্রগতিতে অবদান রেখেছেন, যাদের ত্যাগ, তিতিক্ষা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে উন্নতি লাভ করেছে। তাদের সবাইকে মাফ করে দিন। তাদের মহৎ উদ্যোগকে কবুল করে নিন।

 

তাদের মধ্যে যারা বেঁচে আছেন তাদেরকে উন্নত জীবন দান করুন। বর্তমানে যারা বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত, নিয়োজিত আছেন তাদের জান-মাল, পরিবার-পরিজনদের হিফাজত করুন। তাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ রেজিমেন্টের উত্তরোত্তর উন্নতি দান করুন। প্রত্যেকের দায়িত্ব সততার সাথে পালন করার তৌফিক দান করুন। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার তৌফিক দান করুন। যারা অসুস্থ আছেন তাদেরকে সুস্থতা দান করুন।

 

ইয়া আল্লাহ্! এই বেঙ্গল রেজিমেন্টের জ্ঞান বিতরন পদ্ধতি এবং সকল কার্য পরিচালনা যেন বাংলাদেশ সেনাবহিনীর জন্য মাইল ফলক হয়ে থাকে সেই তৌফিক দান করুন। এর ব্যক্তি, বস্তু ও তথ্যের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয় সে ব্যবস্থা দান করুন।

 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল নিয়ম কানুন বিশেষ করে পরস্পরের মাঝে হৃদ্যতা, মমতাবোধ ও একতার মনোবল নিয়ে আগত দিনের কর্মকান্ড সফলতার সহিত পালনের তৌফিক দান করুন।

 

বিগত দিনের ভাল কাজের গতি অব্যাহত রাখুন। যারা এ কাজে নেতৃত্ব দিয়ে পৃষ্টপোশকতা করছেন, তাদেরকে সঠিক পরিকল্পনা ও দূরদর্শী কলা-কৌশল গ্রহন করার তৌফিক দান করুন।

 

আমাদের দেশ ও জাতিকে একটি উন্নত দেশ ও জাতি হিসেবে পরিগণিত হওয়ার তৌফিক দান করুন।

 

আমাদের শারিরীক, মানসিক, সুস্থ্যতা দান করুন। যাবতীয় ক্লান্তি, অবসাদ দূর করুন। আমাদের সাহস, মনোবল বৃদ্ধি করুন। যাবতীয় দূর্বলতা, ভিরুতা, অকল্যাণ, অমঙ্গল দূর করুন। আমাদের পারদর্শীতা, উৎকর্ষতা, গতিশীলতা বৃদ্ধি করুন। যাবতীয় বিপদাপদ, বালা-মসিবত, বাধা-বিপত্তি ও দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে হিফাযত করুন। আমাদের উপর আপনার খাছ রহমত নাযিল করুন। আমিন!!

 

১৬ ফেব্রুয়ারি (মৃ:১৯৮৪ ইং) জেনারেল এম এ জি ওসমানীর মৃত্যু বার্ষিকী

আজ ১৬ ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সাল। বাংলাদেশের অকুতোভয় বীর সেনানী ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সর্বাধিনায়ক জেনারেল মোহাম্মাদ আতাউল গনি ওসমানীর ৩৯তম মৃত্যু বার্ষিকী।  এ দিনে আমরা তাকে স্বরন করে এই মহান ব্যক্তিত্বের রুহের মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহ্ তাআলার কাছে বিশেষ প্রার্থনা করবো।

 

বাংলাদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ইন চীফ জেনারেল এম এ জি ওসমানী ১৯১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের বর্তমান সুনামগঞ্জ জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৩৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ক্যাডেট হিসেবে ব্রিটিশ-ভারত সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। কৃতিত্বের সাথে প্রশিক্ষণ শেষ করে ১৯৪০ সালে কমিশন লাভ করেন। মেধা ও দক্ষতার গুনে ১৯৪১ সালে ক্যাপ্টেন এবং ১৯৪২ সালে মাত্র তেইশ বছর বয়সে তিনি মেজর পদবী লাভ করেন। তদানিন্তন বৃটিশ ভারতীয় সেনাবহিনীতে তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ মেজর। বাঙ্গালী হয়ে এত অল্প বয়সে মেজর পদে পদোন্নতি তাকে বিশেষ মর্যাদা ও পরিচিতি প্রদান করে। মেজর পদে তিনি একটি যান্ত্রিক পরিবহন ব্যাটালিয়নের অধিনায়কত্ব করে এক গৌরবময় ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ভারত বিভক্তির পর ১৯৪৭ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবহিনীতে লেঃ কর্ণেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

 

বৃটিশ-ভারত ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে একজন চৌকষ অফিসার হিসেবে তার খ্যাতি ছিল অসামান্য। যোগ্যতা ও কর্ম দক্ষতার বলে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ দায়িত্ব পালন করেন। স্বীয় কৃতিত্বের জন্য তিনি ১৯৫০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ইষ্ট বেংগল রেজিমেন্টের প্রথম বাঙ্গালী কমান্ড্যান্ট নিযুক্ত হবার গৌরব অর্জন করেন এবং ১৯৫৫ সালের ৬ জুন পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি কর্ণেন পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

 

জেনারেল ওসমানী বেঙ্গল রেজিমেন্টের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন। পাকিস্তানি শাসক ও সামরিক চক্র বিভিন্ন কুট-কৌশলে বেঙ্গল রেজিমেন্ট ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু জেনারেল ওসমানীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও পৃষ্টপোষকতায় বেঙ্গল রেজিমেন্ট উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যায়। তারই প্রচেষ্টায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে বাঙ্গালী সৈনিকের কোটা দুই থেকে দশ শতাংশে উন্নীত হয়। তার সময়ে বেঙ্গল রেজিমেন্টের ব্যাটালিয়নগুলির সংখ্যা দুই থেকে ছয় এ গিয়ে পৌঁছে।

 

তদানিন্তন কর্ণেল এম এ জি ওসমানী ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সেনাবহিনী হতে অবসর গ্রহণ করেন এবং অবসরে এসে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে বসবাস শুরু করেন। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য (এম এন এ) হিসেবে নির্বাচিত হন।

 

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি মুক্তি বাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত হন। পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীদের উৎখাত করার জন্য তিনি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলস এর বাঙ্গালী অফিসার ও সৈনিকদের নিয়ে তিনি একটি নিয়মিত বাহিনী গঠন করেন। বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটি গেরিলা বাহিনীও তিনি গঠন করেন। অত্যন্ত দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে চৌকষ পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে তিনি মুক্তি বাহিনী ও গেরিলা বাহিনী পরিচালনা করেন।

 

মুক্তিযুদ্ধে তার বীরত্ব ও কৃতিত্ব পূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে পূর্ণাঙ্গ জেনারেল পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেন। ০৭ এপ্রিল ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হতে অবসর গ্রহণ করেন।

 

দি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাথে মরহুম জেনারেল ওসমানীর ছিল নিবিড় সম্পর্ক। অবসর জীবনেও তিনি এই রেজিমেন্টের উন্নয়নে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতেন। ১৯৮৪ সালে বার্ধক্য ও রোগাক্রান্ত হয়ে বেশকিছু দিন সি এম এইচ ঢাকা সেনানিবাসে চিকিৎসাধীন থাকার পর উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাঁকে লন্ডনের একটি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অবশেষে উক্ত হাসপাতালেই তিনি ১৯৮৪ সালের ১৬ ই ফেব্রুয়ারি তারিখে ৬৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে সিলেটে হযরত শাহ জালাল (রঃ)-এর মাজার প্রাঙ্গনে তাকে সমাহিত করা হয়।

 

সমগ্র দেশবাসি তথা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিকট জেনারেল ওসমানী ছিলেন অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব। বিশেষ করে দি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্যদের নিকট তার পৃথক পরিচয় ও অবদানের ফলশ্রুতিতে তিনি বিশেষভাবে স্বরণীয় হয়ে রয়েছেন। আমরা সকলে তার আত্মার চির শান্তির জন্যে মহান আল্লাহ্ নিকট বিশেষ প্রার্থনা করবো।

 

তাই আমরা এখন প্রত্যেকেই মনে মনে পাঠ করবোঃ

ক। সূরা ফাতিহা ০১ বার

খ। সূরা ইখলাস ০৩ বার

গ। দরুদ শরীফ ০১ বার

 

 

 

মোনাজাত

১।

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿البقرة: ٢٠١﴾

رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ ﴿الأعراف: ٢٣﴾ 

২। হে আল্লাহ্! ফযর সালাতের পর আমরা আপনার নিটক প্রার্থনা করছি। আমাদের নামায, তিলাওয়াত, দোয়া-মোনাজাত এবং নেক আমল সমূহ কবুল করুন। এ অসিলায় আমাদের সকলের জীবনের তামাম গুনাহ গুলো মাফ করে দিন। এর যা সাওয়াব হয় তা অসংখ্য গুণ বৃদ্ধি করে দিয়ে আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ)-এর আরওয়াহ মোবারকে পৌছিয়ে দিন।

 

৩। তামাম বিশ্বের যত মুমিন-মুমিনাত ইন্তেকাল করেছেন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যত সদস্য শাহাদত বরণ করেছেন সকলের আরওয়াহ মোবারকে এর সাওয়াব পৌছিয়ে দিন। বিশেষ করে আমাদের সকলের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি ও ১৯৭১ সালের মুক্তি যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী রুহের উপর এর সওয়াব পৌছিয়ে দিন।

 

৪। ইয়া রাব্বাল আলামীন ! আজকের এ দিবসে আমরা পরম শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছি এবং আপনার নিকট তাঁর আত্মার মাগফেরাত ও সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করছি। মেহেরবাণী করে তার জীবনের যাবতীয় ভূল- ত্রুটি মাফ করে শাহাদাতের পরিপূর্ণ মর্যাদা দান করুণ। তার জীবনের সকল গুনাহ গুলো মাফ করে দিন। কিয়ামত পর্যন্ত কবর আযাব মাফ করে দিন। অন্ধকার কবরকে দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দিন। অন্ধকার কবরকে ঈমানী নূরে আলোকিত করে দিন। তার কবরকে জান্নাতের টুকরায় পরিণত করে দিন। বিনা হিসাবে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করে দিন। তার পরকালীন জীবনকে শান্তিময় করে দিন।

 

৫। হে আল্লাহ ! তাদের ত্যাগ ও প্রচেষ্টায় আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি তা কিয়ামত পর্যন্ত অক্ষুন্ন রাখুন। এ প্রিয় জন্মভূমির ভালবাসায় এবং স্বাধীনতা ও সার্বোভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার জন্য সবাইকে শান্তির পরশে থেকে দেশের কল্যাণার্থে এক যোগে কাজ করার তৌফিক দান করুণ।

 

৬। ইয়া পরওয়ারদিগারে আলম ! তিনার পরিবারের সদস্যদেরকে উত্তম ধৈর্য্য ধারণ করার তৌফিক দান করে দিন। তিনার পরিবারের সকল সদস্যদেরকে সুন্দর জীবন ও জীবিকা নসিব করুন। তিনার পরিবারের উপর আপনার খাছ রহমত, বরকত ও সাহায্য দান করুন। তাদেরকে যাবতীয় বিপদ, আপদ ও বালা-মসিবত থেকে হিফাযত করুণ। তাদেরকে সম্মানজনক জীবন-জীবিকা দান করুণ।

 

হে আল্লাহ্ আমাদের ভুল ত্রুটি মাফ করে দিন। আপনার সুন্দর সুন্দর নামের অসিলায় আমাদের আজকের দোয়া ও মোনাজাতকে কবুল আর মুঞ্জুর করে নিন।

 

رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ﴿البقرة: ١٢٧﴾ وَتُبْ عَلَيْنَا إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ ﴿البقرة: ١٢٨﴾

رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا﴿الإسراء: ٢٤﴾

 


মোনাজাত-২

 


অজানা শহীদ সমাধীতে (ইবিআরসি) শ্রদ্ধারঞ্জলির সময় দু‘আ
الحمد لله رب العالمين-ٌ والعاقبة للمتقين-ٌ والصلاة والسلام علي رسوله الكريم-ٌ وعلي اله واصحابه اجمعين-ٌ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿البقرة: ٢٠١﴾ رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ﴿البقرة: ١٢٧﴾ وَتُبْ عَلَيْنَا إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ ﴿البقرة: ١٢٨﴾ 
১। ইয়া ইলাহাল আলামিন! ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অসংখ্য রিক্রুটসহ নাম না জানা যে সকল সেনাসদস্য শহীদ হয়ে এই সমাধিতে চির নিদ্রায় শায়িত রয়েছেন। তাদের সবাইকে আপনি মাফ করে দিন। সেই সাথে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী সকল শহীদকে ক্ষমা করে দিন।

২। হে আল­াহ্! মহান স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত যে সকল বীর সেনাসদস্য (পার্বত্য চট্টগ্রামে, জাতিসংঘ শান্তি মিশনে, পিল খানায় হত্যাযজ্ঞে এবং হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায়) শাহাদত বরণ করেছেন, সকলের আত্মত্যাগ আপনি কবুল করে নিন। শহীদগণের পরকালীন জীবনকে শান্তিময় করে দিন। তাঁদের ভুল ত্র“টি মাফ করে সকলকে চির শান্তির স্থান ‘জান্নতুল ফিরদাউস’ দান করুন।

৩। রাব্বাল আলামিন! দেশে, বিদেশে কর্মরত ও নিয়োজিত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যগণের প্রতি রহমত দান করে তাদের জান-মাল, পরিবার-পরিজনের হিফাজত করুন।

৪। হে আল­াহ্! বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি দান করুন। বাংলাদেশকে একটি সুখি ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে কবুল করে নিন।

৫। আমাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিন। আমিন
বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন।


অজানা শহীদ সমাধীতে (ইবিআরসি) শ্রদ্ধারঞ্জলির সময় দু‘আ (মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা-২০১৪)

الحمد لله رب العالمين-ٌ والعاقبة للمتقين-ٌ والصلاة والسلام علي رسوله الكريم-ٌ وعلي اله واصحابه اجمعين-ٌ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿البقرة: ٢٠١﴾ رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ﴿البقرة: ١٢٧﴾ وَتُبْ عَلَيْنَا إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ ﴿البقرة: ١٢٨﴾
ইয়া ইলাহাল আলামিন! ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অসংখ্য রিক্রুটসহ নাম না জানা যে সকল সেনাসদস্য শহীদ হয়ে এই সমাধিতে চির নিদ্রায় শায়িত রয়েছেন। তাদের সবাইকে আপনি মাফ করে দিন। সেই সাথে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী সকল শহীদকে ক্ষমা করে দিন।
হে আল­াহ্! বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে মাফ করে দিন এবং সবাইকে জান্নাতুল ফিরদৌস নসীব করুন।

হে আল­াহ্! মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যারা নিয়োজিত আছেন তাদের সবাইকে দেশ ও জাতির কল্যাণে আরো বেশী করে কাজ করার তৌফিক দিন। হে আল­াহ্ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের উপর আপনার খাস রহমত বর্ষণ করুন।

হে আল­াহ্! বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি দান করুন। বাংলাদেশকে একটি সুখি ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে কবুল করে নিন। আমাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিন। আমিন!
বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন।



১৬ ডিসেম্বর: ‘মহান বিজয় দিবস’ ২০..
সম্মানিত উপস্থিতি! আমরা জানি আজ ১৬ ডিসেম্বর ২০.. ইং। আজ ‘মহান বিজয় দিবস’ ২০.. ইং । ‘মহান বিজয় দিবস’, ১৬ ডিসে¤¦র বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের পরম আনন্দ, উৎসব ও গৌরবের দিন। আমাদের জাতীয় জীবনে এ দিনটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল এ দেশের আপামর জনসাধারণ ও সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যগণ। বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং দীর্ঘ ০৯ (নয়) মাস ব্যাপি সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর, আল­াহ্ তা‘আলার মেহেরবানীতে দখলদান পাকিস্তানী বাহিনীকে পরাজিত করে, প্রিয় মাতৃভূমিকে শত্র“মুক্ত করে, এই দিনে চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ তাই বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে সর্বকালের শ্রেষ্ঠতম ঘটনা। মাতৃভূমির অখন্ডতা রক্ষায় প্রাণের বিনিময়ে হলেও যে কোন ষড়যন্ত্র ও আক্রমন মোকাবেলার জন্যেও সেনাবাহিনীর সকল সদস্য সর্বদা সচেষ্ট থাকবে। মহান এ দিনে আমরা সশ্রদ্ধচিত্তে স্বরণ করবো সেই সব অকুতোভয় বীর শহীদদের, যাদের সুমহান আতœত্যাগের বিনিময়ে আজকের দিনে বিজয় লাভ সম্ভব হয়েছিল এবং বিশ্বের ইতিহাসে স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র রূপে বাংলাদেশের অভ্যূদয় ঘটেছিল। আমরা পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা। তাদের সকলের রুহের মাগফিরাত ও চিরশান্তি কামনা এবং আমাদের দেশের শান্তি, অগ্রগতি, সম্মৃদ্ধি আর সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর অগ্রগতি সম্মৃদ্ধি ও একাত্বতা কামনা করে মহান আল­াহ্ রাব্বুল আলামিনের দরবারে প্রার্থনা করবো।  এ উপলক্ষ্যে আজকের এই আয়োজিত বিশেষ দোয়ার অনুষ্ঠান। তাই আমরা এখন প্রত্যেকেই মনে মনে পাঠ করবোঃ

ক। সূরা ফাতিহা ০১ বার
খ। সূরা ইখলাস ০৩ বার
গ। দরুদ শরীফ ০১ বার


মোনাজাত
১।
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿البقرة: ٢٠١﴾
২। হে আল­াহ্, আমাদের তিলাওয়াত, দোয়া-মোনাজাত এবং নেক আমল সমূহ কবুল করুন। আমাদের কৃত নেক আমল সমূহের ছওয়াব বহুগুন বৃদ্ধি করে মহানবী (সাঃ) এর রওজা পাকে পৌছে দিন। যাদের আতœত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা সেই সব বীর শহীদদের আমলনামায় সওয়াব সমূহ পৌছে দিন।

৩। যারা স্বাধীনতার আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে মাতৃভূমির অখন্ডতা রক্ষায় শহীদ হয়েছেন তাদেরকে শহীদের পরিপূর্ণ মর্যাদা দান করুণ।

৪। শহীদগণের পরকালীন জীবনকে শান্তিময় করে দিন। তাঁদের ভুল ত্র“টি মাফ করে সকলকে চির শান্তির জান্নতুল ফিরদাউস দান করুন।

৫। হে দয়াময় আল­াহ্, শহীদ পরিবার এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের হেফাজত করুন। সকলকে সর্বদা উত্তম ধৈর্য্য ধারণ করার তওফিক দান করুন।

৬। শান্তি ও সহমর্মিতার জন্য যারা লড়াই করে বেচে আছেন তাদেরকে সুন্দর জীবন ও সু-সাস্থ্য দান করুণ।

৭। আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে সার্বিক শান্তি ও সমৃদ্ধি দান করুন এবং আমাদের দেশকে ও দেশবাসীকে হিফাজত করুন।

৮। ইয়া রহমানুর রহীম, দেশে-বিদেশে কর্মরত ও নিয়োজিত বাংলাদেশ সশˉ¿  বাহিনীর সকল সদস্যগণের জান-মালের হিফাজত করুন।

৯। মাতৃভূমির অখন্ডতা রক্ষায় আমাদের সবাইকে শান্তির পরশে থেকে দেশ ও মাতৃকার সেবা করার তাওফীক দান করুণ।

১০। দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে জাতি গঠণ মূলক কাজে সর্বোপরি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সশস্ত্র বাহিনী যেন সুনাম ও যুগ্যোতার সাথে কাজ করতে পারে সেই তাওফিক দান করুণ।
আমাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিন। আমিন
বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন।


১৫ ফেব্র“য়ারী ‘টাইগার্স ডে’
আজ ১৫ ফেব্র“য়ারী ...(২০১৫)..সাল। বাংলাদেশের সামরিক ইতিহাসে একটি গৌরব উজ্জল দিন। ১৯৪৮ সালের এই তারিখে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১ম ব্যাটালিয়ন সিনিয়র টাইগার এর প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাঙ্গালী জাতির পৃথক সামরিক সত্ত¡া দি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের গোড়া পত্তন ঘটে। ঐতিহ্যবাহী এ রেজিমেন্টের আজ ..(৬৮)....তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী।

দি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট উলে­খ করতে হলে বলতে হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী দু’টি বাাঙ্গালী মুসলিম পাইওনিয়ার কোম্পানী নিয়ে মেজর গনির অফুরন্ত উদ্যোগে প্রথম এ রেজিমেন্টের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠনে পাকিস্তান সরকারের অনুমোদন লাভের পর মুসলিম পাইওনিয়ার কোম্পানী নং ১২৫৬ ও ১৪০৭ এর অধিনায়ক মেজর এম এ গনি এবং ক্যাপ্টেন এস ইউ খান, ১৯৪৭ সালে সেপ্টে¤¦র মাসে ঢাকার কুর্মিটোলায় একত্রিত হয়ে নিজেদের কোম্পানীদ্বয়কে পূর্ণ গঠিত করে মেজর গণির অধিনায়কত্তে¡ ১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের গোড়া পত্তন করেন। পরবর্তিতে ১৯৪৮ সালের ১৫ ই ফেব্র“য়ারী এক অনাড়¤¦র অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকার কুর্মিটোলা সেনানিবাসে তদানিন্তন পূর্ব বাংলার গভর্নর স্যার ফ্রেডরিক ১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের জন্ম ঘোষণা করেন। প্রথম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠা দিবসই ‘‘টাইগার্স ডে’’ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

এ রেজিমেন্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সর্ববৃহৎ যোদ্ধা দল। এ রেজিমেন্টের রয়েছে গৌরব উজ্জল ইতিহাস। সমরে ও শান্তিতে এ রেজিমেন্টের সদস্যগণ কারো থেকে পিছিয়ে নেই।

১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে সবচেয়ে বেশী পদক প্রাপ্তির তুলনাহীন রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল এ রেজিমেন্ট। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধেও এ রেজিমেন্ট সাহসিকতা ও সাফল্যের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধে এ রেজিমেন্টের অগনিত সদস্য আত্মত্যাগ করেছেন। সাত বীর শ্রেষ্ঠের দুই জন লালন করছে এ রেজিমেন্ট। এ রেজিমেন্টের সদস্যবৃন্দ দেশের যে কোন প্রয়োজনে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত।

আমরা শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করছি এ রেজিমেন্টের সে সকল বীর যোদ্ধাদের যাদের অকুতোভয় প্রচেষ্টা ও আত্মত্যাগ এ রেজিমেন্টকে মহিমান্বিত করেছে। এখন আমরা এ রেজিমেন্টের সকল সদস্যের সুখ ও সমৃদ্ধি এবং উত্তরোত্তর উন্নতি কামনা করে ও শহীদদের মাগফিরাত কামনা করে মহান প্রভুর দরবারে দু‘আ করবো।

তাই আমরা এখন প্রত্যেকেই মনে মনে পাঠ করবোঃ
ক। সূরা ফাতিহা ০১ বার
খ। সূরা ইখলাস ০৩ বার
গ। দরুদ শরীফ ০১ বার



মোনাজাত
১।
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿البقرة: ٢٠١﴾
২। হে আল­াহ্! আজ ১৫ ফেব্র“য়ারী .....তম টাইগার্স ডে। এ দিনে ফযর সালাতের পর আমাদের তিলাওয়াত, দোয়া-মোনাজাত এবং নেক আমল সমূহ কবুল করুন। আমাদের কৃত নেক আমল সমূহের ছওয়াব বহুগুন বৃদ্ধি করে মহানবী (সাঃ) এর রওজা পাকে পৌছে দিন।

রাব্বাল আলামীন! দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল টাইগার্স বাহিনী। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে আপনার দয়ায় তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছে, এ জন্য আমরা আপনার নিকট শোকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

ইয়া আল­াহ্! ভবিষ্যতে যাতে এই টাইগার্স বাহিনীর সকল সামরিক / অসামরিক সদস্য তাদের উপর অর্পিত দায়িত্বগুলো সুষ্ঠ, সুন্দর, সুচারুভাবে এবং সম্মান, মর্যাদা, দক্ষতা, আমানত ও সাফল্যের সাথে সুসম্পন্ন করতে পারে সে তৌফিক দান করুন।

রাব্বাল আলামীন! মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এ বাহিনীর যে সব সদস্যগণ শাহাদাত বরণ করেছেন তাদেরকে মাফ করে দিন। তাদের আত্মতাগকে কবুল করে নিন, তাদেরকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন।

এ ছাড়াও বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যারা এর উন্নতি ও অগ্রগতিতে অবদান রেখেছেন, যাদের ত্যাগ, তিতিক্ষা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে উন্নতি লাভ করেছে। তাদের সবাইকে মাফ করে দিন। তাদের মহৎ উদ্যোগকে কবুল করে নিন।

তাদের মধ্যে যারা বেঁচে আছেন তাদেরকে উন্নত জীবন দান করুন। বর্তমানে যারা বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত, নিয়োজিত আছেন তাদের জান-মাল, পরিবার-পরিজনদের হিফাজত করুন। তাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ রেজিমেন্টের উত্তরোত্তর উন্নতি দান করুন। প্রত্যেকের দায়িত্ব সততার সাথে পালন করার তৌফিক দান করুন। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার তৌফিক দান করুন। যারা অসুস্থ আছেন তাদেরকে সুস্থতা দান করুন।

ইয়া আল­াহ্! এই বেঙ্গল রেজিমেন্টের জ্ঞান বিতরন পদ্ধতি এবং সকল কার্য পরিচালনা যেন বাংলাদেশ সেনাবহিনীর জন্য মাইল ফলক হয়ে থাকে সেই তৌফিক দান করুন। এর ব্যক্তি, বস্তু ও তথ্যের নিরাপত্তা যেন বিঘিœত না হয় সে ব্যবস্থা করে দিন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল নিয়ম কানুন বিশেষ করে পরস্পরের মাঝে হৃদ্যতা, মমতাবোধ ও একতার মনোবল নিয়ে আগত দিনের কর্মকান্ড সফলতার সহিত পালনের তৌফিক দান করুন।
বিগত দিনের ভাল কাজের গতি অব্যাহত রাখুন। যারা এ কাজে নেতৃত্ব দিয়ে পৃষ্টপোশকতা করছেন, তাদেরকে সঠিক পরিকল্পনা ও দূরদর্শী কলা-কৌশল গ্রহন করার তৌফিক দান করুন।

আমাদের দেশ ও জাতিকে একটি উন্নত দেশ ও জাতি হিসেবে পরিগণিত হওয়ার তৌফিক দান করুন।
আমাদের শারিরীক, মানসিক, সুস্থ্যতা। যাবতীয় ক্লান্তি, অবসাদ দূর। আমাদের সাহস, মনোবল বৃদ্ধি। যাবতীয় দূর্বলতা, ভিরুতা, অকল্যাণ, অমঙ্গল দূর। আমাদের পারদর্শীতা, উৎকর্ষতা, গতিশীলতা বৃদ্ধি। যাবতীয় বিপদাপদ, বালা-মসিবত, বাধা-বিপত্তি ও দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে হিফাযত করে দিন। আমাদের উপর আপনার খাছ রহমত নাযিল করে দিন। আমিন!!

১৬ ফেব্র“য়ারি ১৯৮৪ ইং জেনারেল এম এ জি ওসমানীর মৃত্যু বার্ষিকী
আজ ১৬ ই ফেব্র“য়ারি ২০.. সাল। বাংলাদেশের অকুতোভয় বীর সেনানী ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সর্বাধিনায়ক জেনারেল মোহাম্মাদ আতাউল গনি ওসমানীর..... তম মৃত্যু বার্ষিকী।  এ দিনে আমরা তাকে স্বরন করে এই মহান ব্যক্তিত্বের রুহের মাগফিরাত কামনা করে আল­াহ্ তা‘আলার কাছে বিশেষ প্রার্থনা করবো।
 
বাংলাদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ইন চীফ জেনারেল এম এ জি ওসমানী ১৯১৮ সালের ১ সেপ্টে¤¦র সিলেটের বর্তমান সুনামগঞ্জ জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৩৯ সালের ফেব্র“য়ারীতে তিনি ক্যাডেট হিসেবে ব্রিটিশ-ভারত সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। কৃতিত্বের সাথে প্রশিক্ষণ শেষ করে ১৯৪০ সালে কমিশন লাভ করেন। মেধা ও দক্ষতার গুনে ১৯৪১ সালে ক্যাপ্টেন এবং ১৯৪২ সালে মাত্র তেইশ বছর বয়সে তিনি মেজর পদবী লাভ করেন। তদানিন্তন বৃটিশ ভারতীয় সেনাবহিনীতে তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ মেজর। বাঙ্গালী হয়ে এত অল্প বয়সে মেজর পদে পদোন্নতি তাকে বিশেষ মর্যাদা ও পরিচিতি প্রদান করে। মেজর পদে তিনি একটি যান্ত্রিক পরিবহন ব্যাটালিয়নের অধিনায়কত্ব করে এক গৌরবময় ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ভারত বিভক্তির পর ১৯৪৭ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবহিনীতে লেঃ কর্ণেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

বৃটিশ-ভারত ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে একজন চৌকষ অফিসার হিসেবে তার খ্যাতি ছিল অসামান্য। যোগ্যতা ও কর্ম দক্ষতার বলে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ দায়িত্ব পালন করেন। স্বীয় কৃতিত্বের জন্য তিনি ১৯৫০ সালের ১৯ ফেব্র“য়ারী ইষ্ট বেংগল রেজিমেন্টের প্রথম বাঙ্গালী কমান্ড্যান্ট নিযুক্ত হবার গৌরব অর্জন করেন এবং ১৯৫৫ সালের ৬ জুন পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি কর্ণেন পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
জেনারেল ওসমানী বেঙ্গল রেজিমেন্টের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন। পাকিস্তানি শাসক ও সামরিক চক্র বিভিন্ন ক‚ট-কৌশলে বেঙ্গল রেজিমেন্ট ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু জেনারেল ওসমানীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও পৃষ্টপোষকতায় বেঙ্গল রেজিমেন্ট উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যায়। তারই প্রচেষ্টায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে বাঙ্গালী সৈনিকের কোটা দুই থেকে দশ শতাংশে উন্নীত হয়। তার সময়ে বেঙ্গল রেজিমেন্টের ব্যাটালিয়নগুলির সংখ্যা দুই থেকে ছয় এ গিয়ে পৌঁছে।
তদানিন্তন কর্ণেল এম এ জি ওসমানী ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সেনাবহিনী হতে অবসর গ্রহণ করেন এবং অবসরে এসে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে বসবাস শুরু করেন। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য (এম এন এ) হিসেবে নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি মুক্তি বাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত হন। পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীদের উৎখাত করার জন্য তিনি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলস এর বাঙ্গালী অফিসার ও সৈনিকদের নিয়ে তিনি একটি নিয়মিত বাহিনী গঠন করেন। বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটি গেরিলা বাহিনীও তিনি গঠন করেন। অত্যন্ত দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে চৌকষ পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে তিনি মুক্তি বাহিনী ও গেরিলা বাহিনী পরিচালনা করেন।
মুক্তিযুদ্ধে তার বীরত্ব ও কৃতিত্ব পূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৭১ সালের ১৬ ই হিসে¤¦রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে পূর্ণাঙ্গ জেনারেল পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেন। ০৭ এপ্রিল ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হতে অবসর গ্রহণ করেন।
দি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাথে মরহুম জেনারেল ওসমানীর ছিল নিবিড় সম্পর্ক। অবসর জীবনেও তিনি এই রেজিমেন্টের উন্নয়নে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতেন। ১৯৮৪ সালে বার্ধক্য ও রোগাক্রান্ত হয়ে বেশকিছু দিন সি এম এইচ ঢাকা সেনানিবাসে চিকিৎসাধীন থাকার পর উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাঁকে লন্ডনের একটি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অবশেষে উক্ত হাসপাতালেই তিনি ১৯৮৪ সালের ১৬ ই ফেব্র“য়ারী তারিখে ৬৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে সিলেটে হযরত শাহ জালাল (রঃ)-এর মাজার প্রাঙ্গনে তাকে সমাহিত করা হয়।

সমগ্র দেশবাসি তথা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিকট জেনারেল ওসমানী ছিলেন অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব। বিশেষ করে দি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্যদের নিকট তার পৃথক পরিচয় ও অবদানের ফলশ্র“তিতে তিনি বিশেষভাবে স¥রণীয় হয়ে রয়েছেন। আমরা সকলে তার আত্মার চির শান্তির জন্যে মহান আল­াহ্র নিকট বিশেষ প্রার্থনা করবো।

তাই আমরা এখন প্রত্যেকেই মনে মনে পাঠ করবোঃ
ক। সূরা ফাতিহা ০১ বার
খ। সূরা ইখলাস ০৩ বার
গ। দরুদ শরীফ ০১ বার



মোনাজাত
১।
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿البقرة: ٢٠١﴾
رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ ﴿الأعراف: ٢٣﴾ 
২। হে আল­াহ্! ফযর সালাতের পর আমরা আপনার নিটক প্রার্থনা করছি। আমাদের নামায, তিলাওয়াত, দোয়া-মোনাজাত এবং নেক আমল সমূহ কবুল করুন। এ অসিলায় আমাদের সকলের জীবনের তামাম গুনাহ গুলো মাফ করে দিন। এর যা সাওয়াব হয় তা অসংখ্য গুণ বৃদ্ধি করে দিয়ে আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ)-এর আরওয়াহ মোবারকে পৌছিয়ে দিন।

৩। তামাম বিশ্বের যত মুমিন-মুমিনাত ইন্তেকাল করেছেন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যত সদস্য শাহাদত বরণ করেছেন সকলের আরওয়াহ মোবারকে এর সাওয়াব পৌছিয়ে দিন। বিশেষ করে আমাদের সকলের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি ও ১৯৭১ সালের মুক্তি যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী রুহের উপর এর সওয়াব পৌছিয়ে দিন।

৪। ইয়া রাব্বাল আলামীন ! আজকের এ দিবসে আমরা পরম শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছি এবং আপনার নিকট তাঁর আতœার মাগফেরাত ও সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করছি। মেহেরবাণী করে তার জীবনের যাবতীয় ভূল- ত্র“টি মাফ করে শাহাদাতের পরিপূর্ণ মর্যাদা দান করুণ। তার জীবনের সকল গুনাহ গুলো মাফ করে দিন। কিয়ামত পর্যন্ত কবর আযাব মাফ করে দিন। অন্ধকার কবরকে দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দিন। অন্ধকার কবরকে ঈমানী নূরে আলোকিত করে দিন। তার কবরকে জান্নাতের টুকরায় পরিণত করে দিন। বিনা হিসাবে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করে দিন। তার পরকালীন জীবনকে শান্তিময় করে দিন।

৫। হে আল­াহ ! তাদের ত্যাগ ও প্রচেষ্টায় আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি তা কিয়ামত পর্যন্ত অক্ষুন্ন রাখুন। এ প্রিয় জন্মভূমির ভালবাসায় এবং স্বাধীনতা ও সার্বোভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার জন্য সবাইকে শান্তির পরশে থেকে দেশের কল্যাণার্থে এক যোগে কাজ করার তৌফিক দান করুণ।

৬। ইয়া পরওয়ারদিগারে আলম ! তিনার পরিবারের সদস্যদেরকে উত্তম ধৈর্য্য ধারণ করার তৌফিক দান করে দিন। তিনার পরিবারের সকল সদস্যদেরকে حياة طيبة  ও সু-সাস্থ্য নসিব করে দিন। তিনার পরিবারের উপর আপনার খাছ রহমত, বরকত ও সাহায্য দান করুন। তাদেরকে যাবতীয় বিপদ, আপদ ও বালা-মসিবত থেকে হিফাযত করুণ। তাদেরকে সম্মানজনক জীবন-জীবিকা দান করুণ।

হে আল­াহ্ আমাদের ভুল ত্র“টি মাফ করে দিন। আপনার সুন্দর সুন্দর নামের অসিলায় আমাদের আজকের দোয়া ও মোনাজাতকে কবুল আর মুঞ্জুর করে নিন।

رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ﴿البقرة: ١٢٧﴾ وَتُبْ عَلَيْنَا إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ ﴿البقرة: ١٢٨﴾
رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا﴿الإسراء: ٢٤﴾

২১ শে ফেব্র“য়ারী “ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস”
আজ ২১ ফেব্র“য়ারী ......সাল, আজ “ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস”। বাঙ্গালী জাতীর ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্বরণীয় দিন ২১ শে ফেব্র“য়ারী। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের রক্তে রাঙ্গা এ দিন। এ দিনে আমারা স্মরণ করি জাতির সেই বীর সন্তানদের যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছেন।

ঐতিহাসিক পটভ‚মিঃ
১৯৪৭ সালের ১৪ আগষ্ট ভারত বিভক্তির মাধ্যমে পূর্ব (বর্তমান বাংলাদেশ) ও পশ্চিম পাকিস্তান নিয়ে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তানি শাসকরা আমাদের বাংলাভাষীদের উপর বিদেশী ভাষা উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা চালায়। (অথচ উর্দু ভাষা পাকিস্তানের কোন এলাকার মাতৃভাষা ছিল না। বরং উর্দু ভাষা ছিল দিল­ীর মুসলিম শাসকদের আরবী, ফার্সি, তুর্কি এবং স্থানীয় বিভিন্ন ভাষার সংমিশ্রন।)

১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারের মিঃ জিন্নাহ ঢাকায় আসেন। তিনি রমনা রেসকোর্স মাঠে এক জন সভায় ঘোষনা করেন করেন, "টৎফঁ ধহফ টৎফঁ ংযধষষ নব ঃযব ড়হষু ংঃধঃব ষধহমঁধমব ড়ভ চধশরংঃধহ" অর্থাৎ পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা হবে একমাত্র উর্দু। এ ঘোাষনায় বাংলার মানুষ সে দিন তীব্র প্রতিবাদ জানায়। তারা উচ্চ কণ্ঠে বলে এটা কেউ মেনে নিবো না, কারণ তৎকালীন পাকিস্তানের দুই-তৃতীয়াংশ অধিবাসী পূর্ববাংলার। তাদের মাতৃভাষা বাংলা।

১৯৫২ সালে এর চুড়ান্ত রূপ প্রকাশিত হয়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর খাজা নাজিম উদ্দিন পশ্চিম পাকিস্তান থেকে এসে ঘোষণা করেন, ‘‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।’’ এখবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে ছাত্র-শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, কৃষক, শ্রমিক সকলেই এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। সরকার আন্দোলন দমন করার জন্য রাস্তায় সৈণ্য মোতায়েন করে ও ১৪৪ ধারা জারি করে। ফলে ছাত্ররা আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে। নিরস্ত্র ছাত্রদের উপর পুলিশ গুলি চালায়। এতে শহীদ হয় রফিক উদ্দীন আহমদ, আব্দুল জব্বার, আবূল বরকত এবং আব্দুস সালাম সহ নাম না জানা আরো অনেকে এবং আরো অনেকে আহত হন। দীর্ঘ আপোসহীন সংগ্রাম এবং চরম আতœত্যাগের বিনিময়ে অবশেষে ১৯৫৬ সালে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার মর্যাদা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলা ভাষার এ মর্যাদা আরও সুদৃঢ় ও তাৎপর্যময় হয়ে ওঠে। ২১ শে ফেব্র“য়ারী এখন শুধু বাংলাদেশের ভাষা দিবস নয় বরং সারা বিশ্বের ১৯৩ টি দেশের জন্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৯৯ সালের ১৭ ই নভেম্বর ইউনেস্কোর ৩০ তম সাধারণ সম্মেলনে এ স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। ২০০০ সালের ২১শে ফেব্র“য়ারী থেকে দিবসটি জাতিসঙ্ঘের সদস্য দেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। তাই তখন থেকে ইউনেস্কোর সদস্য ভ‚ক্ত পৃথিবীর সব ভাষাভাষী মানুষ এ দিবসটি পালন করছে। এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন এবং বিশাল সম্মান বয়ে এনেছে। আমরা আজ ভাষা শহীদদের মাগফিরাত কামনা করে মহান আল­াহ্র দরবাবে প্রার্থনা করব।
তাই আমরা এখন প্রত্যেকেই মনে মনে পাঠ করবোঃ
ক। সূরা ফাতিহা ০১ বার
খ। সূরা ইখলাস ০৩ বার
গ। দরুদ শরীফ ০১ বার
মোনাজাত
১।
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿البقرة: ٢٠١﴾
رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ ﴿الأعراف: ٢٣﴾ 
২। হে আল­াহ্! ফজর সালাতের পর আমরা আপনার নিটক প্রার্থনা করছি। আমাদের সালাত, তিলাওয়াত, দোয়া-মোনাজাত এবং নেক আমল সমূহ কবুল করুন। এ অসিলায় আমাদের সকলের জীবনের গুনাহ গুলো মাফ করে দিন। এর যা সাওয়াব হয় তা অসংখ্য গুণ বৃদ্ধি করে দিয়ে আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ)-এর আরওয়াহ মোবারকে পৌছিয়ে দিন।

৩। তামাম বিশ্বের যত মুমিন-মুমিনাত ইন্তেকাল করেছেন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যত সদস্য শাহাদত বরণ করেছেন সকলের আরওয়াহ মোবারকে এর সাওয়াব পৌছিয়ে দিন। বিশেষ করে যাদের আতœত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের মাতৃভাষা ও স্বাধীনতা সেই সব বীর শহীদদের, আরওয়াহ মোবারকে এর সওয়াব পৌছিয়ে দিন।

৪। আয় আল­াহ্! যারা ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে মাতৃভূমির অখন্ডতা রক্ষায় শহীদ হয়েছেন তাদেরকে শহীদের পরিপূর্ণ মর্যাদা দান করুণ। শান্তি ও সহমর্মিতার জন্য যারা লড়াই করে বেচে আছেন তাদেরকে সুন্দর জীবন ও সু-সাস্থ্য দান করুণ।

৫। আয় আল­াহ্! শহীদ পরিবার এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা যেন সাফল্যের সাথে দিনাতিপাত করতে পারে সেই ব্যবস্থা দান করুণ।

৬। আয় আল­াহ্! মাতৃভূমির অখন্ডতা রক্ষায় আমাদের সবাইকে শান্তির পরশে থেকে দেশ ও মাতৃকার সেবা করার তাওফীক দান করুণ। জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলায় এবং আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষা মিশনের কার্যক্রমে নিজেদের আন্তরিকতা, কর্তব্যনিষ্টা ও দক্ষতার মান বৃদ্ধি করার তাওফিক দান করুণ।

৭। আয় আল­াহ্! মাতৃভূমির অখন্ডতা রক্ষায় যে কোন ধরণের হুমকির মোকাবিলায় দৃঢ়পদে অগ্রসর হওয়ার তাওফিক দান করুণ। আমাদের অকুতোভয় বীর সেনানীরা যেন সম্মান, মর্যাদা, দক্ষতা, আমানত ও সাফল্যের সাথে জাতি গঠনমূলক কাজে সর্বোপরি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম ও যুগ্যোতার সাথে নিজেদের ঐতিহ্যকে স্বমুন্নত রাখতে পারে সেই তাওফিক দান করুণ।

৮। আয় আল­াহ্! আমাদের প্রিয় দেশ ও জাতিকে একটি উন্নত দেশ ও জাতি হিসেবে পরিগণিত হওয়ার তৌফিক দান করুন।

৯। আয় আল­াহ্! আমাদের সবাইকে শারিরীক, মানসিক, সুস্থ্যতা। যাবতীয় ক্লান্তি, অবসাদ দূর। আমাদের সাহস, মনোবল বৃদ্ধি। যাবতীয় দূর্বলতা, ভিরুতা, অকল্যাণ, অমঙ্গল দূর। আমাদের পারদর্শীতা, উৎকর্ষতা, গতিশীলতা বৃদ্ধি। যাবতীয় বিপদাপদ, বালা-মসিবত, বাধা-বিপত্তি ও দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে হিফাযত করে দিন। আমাদের উপর আপনার খাছ রহমতের ছায়া বিস্তার করে দিন। আমিন!!


২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনাঃ
আজ ২৬ মার্চ। আমাদের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। স্বাধীনতা মানব জীবনে এক অমূল্য সম্পদ। যুগে যুগে বিভিন্ন দেশের মানুষ স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষও এর থেকে বাদ যায় নি। অনেক রক্ত ও জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা লাভ করেছে। আত্মত্যাগের মহান অঙ্গীকার ও নবপ্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে আমরা প্রতি বছর এ দিনটি পালন করে থাকি।
২৬শে মার্চের পটভূমিঃ
স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আজ আমরা যে গৌরববোধ করি, এ গৌরব অর্জনের পেছনে রয়েছে বহু দিনের সংগ্রাম ও রক্তক্ষয়ী এক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। একটু পেছনে তাকালে আমরা দেখতে পাই ১৯৪৭ সালে বৃটিশ শাসনের কবল থেকে মুক্তি পেয়ে জাতি তত্বের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান নামে দু’টি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) ও পশ্চিম পাকিস্তান নিয়ে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র গঠিত হয়। কিন্তু স্বাধীনতার সুফল পায়নি বাঙ্গালীরা; বরং বাঙ্গালী জাতি পূর্বের ন্যায় শোষিত হতে থাকে। পশ্চিম পাকিস্তানের লোকজন বাঙ্গালিদের সাথে বিমাতা সুলভ আচরণ করতে থাকল। ফলে বাধাগ্রস্থ হলো এ দেশের উন্নয়ন। এ দেশের ভাষার উপর আঘাত হানা হলো। ফলে এ দেশের মেধাবী ছাত্ররা শহীন হন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, ভাষা আন্দোলনের মধ্যেই স্বাধীনাতর বীজ নিহিত ছিল। আন্দোলনর ধারাবাহিকতায় ১৯৬৭ সালের স্বাধীকার আন্দোলন, ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন এ সবের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে সংখ্যা গরিষ্ট আসনে বাঙ্গালিদের বিজয় অর্জিত হলেও পাকিস্তানিরা জাতিয় পরিষদের অধিবেশন আহবান করল না এবং বাঙ্গালিদের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করল না। এ সমস্ত কারণে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতার জন্য উম্মুখ হয়ে থাকে। এরই মধ্যে জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭-ই মার্চের ভাষণ এ দেশের মানুষকে স্বাধীনতার দিকে আরো উদ্বুদ্ধ করে তোলে। ২৫মার্চ রাতে পাকিস্তানিরা এ দেশের নিরস্ত্র ঘুমন্ত মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে। তারপর দিনই ২৬ শে মার্চ ‘‘বাংলাদেশ নামে’’ এ দেশের স্বাধীনাত ঘোষণা করা হয়।

ঘোষণার পরপরই এ দেশের মুক্তিকামী ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, চাকুরীবি, পেশাজীবিসহ সকল শ্রেণীর মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। যারা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে পারেননি, তারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতা করেছে।
এ সময় জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত করা হয়। এ দেশের অনেক সামরিক, আধামারিক বাহিনী ও পুলিশ এ যুদ্ধে অংশ গ্রহন করে শাহাদাত বরণ করেণ। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর। ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসে¤¦র পাকিস্তানি সৈন্যরা আত্মসমর্পন করে। তখন থেকেই আমরা ২৬ শে মার্চকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করে আসছি।
মূলতঃ এ দিবসটি আমাদেরকে স¥রণ করিয়ে দেয় গৌরব উজ্জল মুক্তি যুদ্ধের কথা। আর শিক্ষা দেয় অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করতে। আর অসংখ্য শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ স্বাধীন দেশ ও দেশের পতাকাকে ভালবাসতে এবং দেশের স্বাধীনাত রক্ষা করতে।
আজ আমরা সেই গৌরবময় মুক্তি যুদ্ধে আত্মদানকারী সকল বীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মহান প্রভূর দরবারে দু’আ করব। আল­াহ্ তা‘আলা যেন আমাদের অর্জিত স্বাধীনতাকে মর্যাদার সাথে অক্ষুন্ন রাখেন এবং দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার তৌফিক দেন। আমিন!!

মোনাজাত
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿البقرة: ٢٠١﴾
২। হে আল­াহ্, আমাদের তিলাওয়াত, দোয়া-মোনাজাত এবং নেক আমল সমূহ কবুল করুন। আমাদের কৃত নেক আমল সমূহের ছওয়াব বহুগুন বৃদ্ধি করে মহানবী (সাঃ) এর রওজা পাকে পৌছে দিন। যাদের আতœত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা সেই সব বীর শহীদদের আমলনামায় সওয়াব সমূহ পৌছে দিন।
৩। যারা স্বাধীনতার আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে মাতৃভূমির অখন্ডতা রক্ষায় শহীদ হয়েছেন তাদেরকে শহীদের পরিপূর্ণ মর্যাদা দান করুণ।
৪। শহীদগণের পরকালীন জীবনকে শান্তিময় করে দিন। তাঁদের ভুল ত্র“টি মাফ করে সকলকে চির শান্তির জান্নতুল ফিরদাউস দান করুন।
৫। হে দয়াময় আল­াহ্, শহীদ পরিবার এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের হেফাজত করুন। সকলকে সর্বদা সবর করার তওফিক দান করুন।
৬। শান্তি ও সহমর্মিতার জন্য যারা লড়াই করে বেচে আছেন তাদেরকে সুন্দর জীবন ও সু-সাস্থ্য দান করুণ।
৭। আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে সার্বিক শান্তি ও সমৃদ্ধি দান করুন এবং আমাদের দেশকে ও দেশবাসীকে হিফাজত করুন।
৮। ইয়া রহমানুর রহীম, দেশে-বিদেশে কর্মরত ও নিয়োজিত বাংলাদেশ সশˉ¿  বাহিনীর সকল সদস্যগণের জান-মালের হিফাজত করুন।
৯। মাতৃভূমির অখন্ডতা রক্ষায় আমাদের সবাইকে শান্তির পরশে থেকে দেশ ও মাতৃকার সেবা করার তাওফীক দান করুণ।
১০। দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে জাতি গঠণ মূলক কাজে সর্বোপরি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সশস্ত্র বাহিনী যেন সুনাম ও যুগ্যোতার সাথে কাজ করতে পারে সেই তাওফিক দান করুণ।
আমাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিন। আমিন
বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন।


জাতীয় পতাকা প্রদান প্যারেডের দু’আ
ইনশাআল­াহ, হে মহান রাব্বুল আলামিন আপনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং ইষ্ট বেংগল রেজিমেন্টের উপর অশেষ রহমত নাযিল করুন।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ইসলামের সূচনালগ্ন থেকেই ইসলামের পতাকা ব্যবহার করেছেন।
সেই গৌরবময় প্রথা অনুস¥রণে আজ আমরা যে পতাকা অর্জন করছি তার সম্মান ও গৌরব অক্ষুন্ন রাখার তৌফিক দান করুন।
সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও সেই পতাকা ধারণ করে রাখার তৌফিক দান করুন।
অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্র“র অশুভ চক্রান্ত হতে সেনাবাহিনী তথা দেশ ও জাতিকে হিফাজত করুন। আমিন!!

৭ ই নভে¤¦র ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’
১। আজ ৭ ই নভে¤¦র ÑÑÑÑÑÑÑÑ সাল। মহান ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ আজ।
২। বাংলাদেশের ইতিহাসে বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ এবং স্বরনীয় একটি দিন ৭ ই নভে¤¦র। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যগণ সর্বস্তরের জনগণকে সংগে নিয়ে এক অবিস্বরনীয় জাতীয় ঐক্য সুসংহত ও সুদৃঢ় করেছিল। সেনাবাহিনীসহ দেশের আপমর জনসাধারণ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে এক সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়েছিল এই দিনে।
৩। এই মহান দিনে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখার জ্য জাতীয় স্বাথৃ, জাতীয় প্রয়োজনে, ঐক্য ও সংহতির অসামান্য দৃষ্টান্ত স্থাপনই আমাদের একমাত্র কাম্য।
৪। এই মহান দিবসে আমরা, দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় আত্ম উৎসর্গকারী বীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত ও চিরশান্তি কামনা করে মহান আল­াহ্ রব্বুল ‘আলামিনের দরবারে প্রার্থনা করবো।

    ২১ শে নভে¤¦র ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’
১। আজ ২১ শে নভে¤¦র -----------সাল। আমাদের মহান  ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’ আজ।
২। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ২১ শে নভে¤¦র একটি ঐতিহাসিক তাৎপর্য মন্ডিত দিন।
৩। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষনার মধ্য দিয়ে এদেশের মুক্তিকামী আপামর জনসাধারনের সাথে আমাদের অকুতোভয় বীর সেনানীরা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ ন’মাস ব্যাপী সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের এই দিনে আমাদের তিন বাহিনীর বীর সেনানীরা জল, স্থল এবং অন্তরীক্ষে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আক্রমন রচনা করে। এ সফল পরিণতিতে মাত্র ১ মাসেরও কম সময়ে দলখদার বাহিনীর হাত হতে মুক্ত হয়ে এদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্ররূপে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান লাভ করে।

৪। এই বিশেষ দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করবো বাংলাদেশ সেনাবহিনী তথা সশস্ত্রবাহিনীর ঐ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং দেশের আপামর মুক্তিকামী জনগণ যারা মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গ করেছেন এবং আমাদের স্বাধীনতাকে সুসংহত করেছেন। বীরত্বপূর্ণ ইতিহাসের ধারক ও বাহক বীর সেনানীদের ত্যাগের মহিমায় সমুজ্জল ঘটনাবহুল এই দিন নতুন প্রজম্মের সেনানীদেরকে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের আদশ্যে উজ্জীবিত করুক।
৫। এই মহান দিবসে আমরা সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের রূহের মাগফিরাত ও চিরশান্তি কামনা করে মহান আল­াহ্ রব্বুল ‘আলামীনের দরবারে প্রার্থনা করবো।     
মোনাজাত
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿البقرة: ٢٠١﴾
২। হে আল­াহ্, আমাদের তিলাওয়াত, দোয়া-মোনাজাত এবং নেক আমল সমূহ কবুল করুন। আমাদের কৃত নেক আমল সমূহের ছওয়াব বহুগুন বৃদ্ধি করে মহানবী (সাঃ) এর রওজা পাকে পৌছে দিন। যাদের আতœত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা সেই সব বীর শহীদদের আমলনামায় সওয়াব সমূহ পৌছে দিন।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনী এবং সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধা ও জনগনের শ্রমকে কবুল করুণ। ৩। যারা স্বাধীনতার আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে মাতৃভূমির অখন্ডতা রক্ষায় শহীদ হয়েছেন তাদেরকে শহীদের পরিপূর্ণ মর্যাদা দান করুণ।

৪। শহীদগণের পরকালীন জীবনকে শান্তিময় করে দিন। তাঁদের ভুল ত্র“টি মাফ করে সকলকে চির শান্তির স্থান ‘জান্নতুল ফিরদাউস’ দান করুন।
৫। হে দয়াময় আল­াহ্, শহীদ পরিবার এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের হেফাজত করুন। সকলকে সর্বদা উত্তম ধৈর্য্য ধারণ করার তাওফিক দান করুন।
৬। শান্তি ও সহমর্মিতার জন্য যারা লড়াই করে বেচে আছেন তাদেরকে সুন্দর জীবন ও সু-সাস্থ্য দান করুণ।
৭। আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে সার্বিক শান্তি ও সমৃদ্ধি দান করুন এবং আমাদের দেশকে ও দেশবাসীকে হিফাজত করুন।

৮। ইয়া রহমানুর রহীম, দেশে-বিদেশে কর্মরত ও নিয়োজিত বাংলাদেশ সশˉ¿  বাহিনীর সকল সদস্যগণের জান-মালের হিফাজত করুন।
৯। মাতৃভূমির অখন্ডতা রক্ষায় আমাদের সবাইকে শান্তির পরশে থেকে দেশ ও মাতৃকার সেবা করার তাওফীক দান করুণ।
১০। দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে জাতি গঠণ মূলক কাজে সর্বোপরি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সশস্ত্র বাহিনী যেন সুনাম ও যুগ্যোতার সাথে কাজ করতে পারে সেই তাওফিক দান করুণ।
আমাদের অকুতোভয় সেনানীরা যেন নিজেদের ঐতিহ্যকে আরো স্বমুন্নত রাখতে পারে সেই তাওফিক দান করুণ।

আমাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিন। আমিন
বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন।


এই ক্লাসটি পিডিএফ ডাউনলোড করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন 

Sunday, February 12, 2023

কুইজ নং-১৫

Friday, February 10, 2023

কুইজ নং-১৪

Monday, February 6, 2023

কুইজ নং-১৩

Sunday, February 5, 2023

১ম ক্লাসের ভিডিও রিকর্ড (অরিয়েন্টেশন ক্লাস)




 

শব্দে শব্দে আল কুরআনের ভাষা শিক্ষা (সূরা বাকারা: আয়াত-০১-১৫)



Proclaim! in the name of thy Lord and Cherisher, Who created.

মুখস্থ নয় শুধু কয়েক বার ( বার)

রিডিং পড়ুন

 

Abykxjbwbf©i AvZ¥-cÖZ¨qx ¯^í mg‡q m‡e©vËg c×wZ‡Z KziAvb eySv/wk¶vi j‡¶¨

“ঘরে বসে আরবী কোরানের ভাষা শিক্ষা কোর্স-২০২২

Key to success in the Holy Quran.

For All

Classes

Students

Learners

Readers

†gvt Dgi dviæK

we. G (Abvm©), Gg. G (ivtwe), Kvwgj Zvdmxi (Btwe), `vIiv‡q nv`xm (KIgx),

`y‡e©va¨ welqvejxi mnR‡eva¨ Dc¯’vcbv

দূরালাপনীঃ ০১৭১৭৯৫৪৩৪৭

 

 

1st Class

Verb-201-210

Non Verb-401-420

সূরা বাকারা-১ম ২য় রুকু

سورة البقرة

بسم الله الرحمن الرحيم

 

الم (1) ذَلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِلْمُتَّقِينَ (2)

 

الٓمٓ

ذَٰلِكَ

ٱلْكِتَٰبُ

لَا

رَيْبَ

فِيهِ

আলিফ লা- মী-

(এটা) সেই

মহাগ্রন্থ (আল্লাহর)

নেই

কোনো সন্দেহ

তাঁরমধ্যে

Alif Laam Meem

That

(is) the Book

no

doubt

in it

এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,

 

This is the Book; in it is guidance sure, without doubt, to those who fear Allah;

 


 


 

هُدًى

لِّلْمُتَّقِينَ

সৎপথ নির্দেশ (হেদায়াত)

মুত্তাকীদের জন্য

a Guidance

for the God-conscious

পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,

to those who fear Allah;


الَّذِينَ  يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ

ٱلَّذِينَ

يُؤْمِنُونَ

بِٱلْغَيْبِ

وَيُقِيمُونَ

ٱلصَّلَوٰةَ

যারা

বিশ্বাস করে

অদৃশ্যের ওপর

এবং প্রতিষ্ঠিত করে

সালাত

Those who

believe

in the unseen

and establish

the prayer

যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে

 

Who believe in the Unseen, are steadfast in prayer, and spend out of what We have provided for them;

 

 


مِنْ مَّا

رَزَقْنَٰ+هُمْ

 

وَمِنْ مَّا

رَزَقْنَٰهُمْ

يُنفِقُونَ

তা হতে যা

তাদের আমরা জীবিকা দিয়েছি

তারা ব্যয় করে

and out of what

We have provided them

they spend


 

وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِ+مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ

وَٱلَّذِينَ

يُؤْمِنُونَ

بِ+مَآ

أُنزِلَ

إِلَيْكَ

এবং যারা

বিশ্বাস করে

বিষয়ে যা

অবতীর্ণ করা হয়েছে

তোমার প্রতি

And those who

believe

in what

(is) sent down

to you

And who believe in the Revelation sent to thee,

এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে


 

وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِك

 

وَمَآ

أُنزِلَ

مِن

قَبْلِ+كَ

এবং যা

অবতীর্ণ করা হয়েছে

থেকে

তোমার পূর্বে

and what

was sent down

from

before you


and sent before thy time, and (in their hearts) have the assurance of the Hereafter.

 

এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে

 


َ وَبِالْآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ (4)

وَبِٱلْءَاخِرَةِ

هُمْ

يُوقِنُونَ

এবং আখিরাতের উপর

তারা

দৃঢ় বিশ্বাস রাখে

and in the Hereafter

they

firmly believe

 


 

أُولَئِكَ عَلَى هُدًى مِنْ رَبِّهِمْ

 

أُو۟لَٰٓئِكَ

عَلَىٰ

هُدًى

مِّن

رَّبِّ+هِمْ

তারাই (প্রতিষ্ঠিত)

উপর

সত্যপথের

পক্ষ হতে

তাদের রবের

Those

(are) on

Guidance

from

their Lord

They are on (true) guidance, from their Lord, and it is these who will prosper.

তারাই নিজেদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথ প্রাপ্ত, আর তারাই যথার্থ সফলকাম


وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ (5)

 

وَأُو۟لَٰٓئِكَ

هُمُ

ٱلْمُفْلِحُونَ

এবং তারাই (ঐসব লোক)

যারা

সফলকাম

and those -

they

(are) the successful ones


إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا سَوَاءٌ عَلَيْهِمْ أَأَنْذَرْتَهُمْ

إِنَّ

ٱلَّذِينَ

كَفَرُوا۟

سَوَآءٌ

عَلَيْهِمْ

ءَأَنذَرْتَهُمْ

নিশ্চয়ই

যারা

অবিশ্বাস করেছে

সমান

তাদের জন্যে

তাদের তুমি সতর্ক কর কি

Indeed

those who

disbelieve[d]

(it) is same

to them

whether you warn them


أَمْ لَمْ تُنْذِرْهُمْ

أَمْ

لَمْ

تُنذِرْهُمْ

অথবা

না

সতর্ক কর তুমি তাদেরকে

or

not

you warn them

 

 

 

 


لَا يُؤْمِنُونَ (6)

لَا

يُؤْمِنُونَ

না

তারা ঈমান আনবে

not

they believe

 

 

 


خَتَمَ اللَّهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ وَعَلَى سَمْعِهِمْ

سَمْعِهِمْ

وَعَلَىٰ

قُلُوبِهِمْ

عَلَىٰ

ٱللَّهُ

خَتَمَ

তাদের শ্রবণশক্তির

এবং উপর

তাদের অন্তরের

উপর

আল্লাহ

সিল মেরে দিয়েছেন

their hearing

and on

their hearts

on

Allah

Has set a seal


وَعَلَى أَبْصَارِهِمْ غِشَاوَةٌ

وَعَلَىٰٓ

أَبْصَٰرِهِمْ

غِشَٰوَةٌ

এবং উপর

তাদের দৃষ্টিশক্তির

আবরণ (দিয়েছেন)

and on

their vision

(is) a veil

 


وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ (7)

وَلَهُمْ

عَذَابٌ

عَظِيمٌ

এবং তাদেরজন্যে (রয়েছে)

শাস্তি

কঠিন

And for them

(is) a punishment

great


 

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَقُولُ آمَنَّا بِاللَّهِ وَبِالْيَوْمِ الْآخِرِ

وَمِنَ

ٱلنَّاسِ

مَن

يَقُولُ

ءَامَنَّا

بِٱللَّهِ

وَبِٱلْيَوْمِ

ٱلْءَاخِرِ

এবং মধ্যহতে

মানুষের (এমনও আছে)

যারা

বলে

'আমরা ঈমান এনেছি

আল্লাহর উপর

দিনের উপর

আখিরাতের''

And of

the people

(are some) who

say

"We believed

in Allah

and in the Day

[the] Last"

 

 

 

 


 

 

 

 


وَمَا هُمْ بِمُؤْمِنِينَ (8)

وَمَا

هُم

بِمُؤْمِنِينَ

অথচ না

তারা

মুমিন

but not

they

(are) believers (at all)

 


يُخَادِعُونَ اللَّهَ وَالَّذِينَ آمَنُوا

يُخَٰدِعُونَ

ٱللَّهَ

وَٱلَّذِينَ

ءَامَنُوا۟

তারা প্রতারিত করতে চায়

আল্লাহকে

(তাদেরকে) যারা

ঈমান এনেছে

They seek to deceive

Allah

and those who

believe[d]

 


وَمَا يَخْدَعُونَ إِلَّا أَنْفُسَهُمْ

أَنفُسَهُمْ

إِلَّآ

يَخْدَعُونَ

وَمَا

তাদের নিজেদেরকে

ছাড়া

তারা প্রতারিত করে

কিন্তু না

themselves

except

they deceive

and not

 


وَمَا يَشْعُرُونَ (9)

يَشْعُرُونَ

وَمَا

তারা অনুভব করে

এবং না

they realize (it)

and not

 

 

 


فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ

فِى

قُلُوبِهِم

مَّرَضٌ

মধ্যে আছে

তাদের অন্তর সমূহের

রোগ (আছে)

In

their hearts

(is) a disease

 

 

 

 


فَزَادَهُمُ اللَّهُ مَرَضًا

فَزَادَهُمُ

ٱللَّهُ

مَرَضًا

বৃদ্ধি করলেন তাই (আরও) তাদেরকে

আল্লাহ্‌

(তাদের) রোগ

so has increased them

Allah

(in) disease

 


وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُوا يَكْذِبُونَ (10)

وَلَهُمْ

عَذَابٌ

أَلِيمٌۢ

بِمَا

كَانُوا۟

يَكْذِبُونَ

এবং তাদের জন্য (রয়েছে)

শাস্তি

কষ্টদায়ক

এজন্যে যে

তারা ছিল

তারা মিথ্যা বলতো

and for them

(is) a punishment

painful

because

they used (to)

[they] lie

 


وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ قَالُوا إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَ (11)

وَإِذَا

قِيلَ

لَهُمْ

لَا

تُفْسِدُوا۟

فِى

ٱلْأَرْضِ

এবং যখন

বলা হয়

তাদের উদ্দেশ্যে

'না

বিপর্যয় সৃষ্টি করো

মধ্যে

পৃথিবীর''

And when

it is said

to them

"(Do) not

spread corruption

in

the earth"


قَالُوا إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَ (11)

قَالُوٓا۟

إِنَّمَا

نَحْنُ

مُصْلِحُونَ

তারা বলে

'মূলতঃ

আমরা

সংশোধনকারী''

they say

"Only

we

(are) reformers"

 


 

أَلَا إِنَّهُمْ هُمُ الْمُفْسِدُونَ

أَلَآ

إِنَّهُمْ

هُمُ

ٱلْمُفْسِدُونَ

সাবধান

তারা নিশ্চয়ই

তারাই

বিপর্যয় সৃষ্টিকারী

Beware

indeed they

themselves

(are) the ones who spread corruption

 


وَلَكِنْ لَا يَشْعُرُونَ (12)

وَلَٰكِن

لَّا

يَشْعُرُونَ

কিন্তু

না

তারা অনুভব করে

[and] but

not

they realize (it)

 


وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُوا كَمَا آمَنَ النَّاسُ

وَإِذَا

قِيلَ

لَهُمْ

ءَامِنُوا۟

كَمَآ

ءَامَنَ

ٱلنَّاسُ

এবং যখন

বলা হয়

তাদের উদ্দেশ্যে

'তোমরা ঈমান আনো

যেমন

ঈমান এনেছে

মানুষ''

And when

it is said

to them

"Believe

as

believed

the people"

 


قَالُوا أَنُؤْمِنُ كَمَا آمَنَ السُّفَهَاءُ

قَالُوٓا۟

أَنُؤْمِنُ

كَمَآ

ءَامَنَ

ٱلسُّفَهَآءُ

তারা বলে

'আমরা কি ঈমান আনবো

যেমন

ঈমান এনেছে

বোকারা''

they say

"Should we believe

as

believed

the fools?"

 


أَلَا إِنَّهُمْ هُمُ السُّفَهَاءُ

أَلَآ

إِنَّهُمْ

هُمُ

ٱلسُّفَهَآءُ

সাবধান

নিশ্চয়ই তারা

তারাই

বোকা

Beware

certainly they

themselves

(are) the fools

 


وَلَكِنْ لَا يَعْلَمُونَ (13)

وَلَٰكِن

لَّا

يَعْلَمُونَ

কিন্তু

না

তারা জানে

[and] but

not

they know

 


وَإِذَا لَقُوا الَّذِينَ آمَنُوا قَالُوا آمَنَّا

وَإِذَا

لَقُوا۟

ٱلَّذِينَ

ءَامَنُوا۟

قَالُوٓا۟

ءَامَنَّا

এবং যখন

তারা মিলিত হয়

(তাদের সাথে) যারা

ঈমান এনেছে

তারা বলে

'আমরা ঈমান এনেছি''

And when

they meet

those who

believe[d]

they say

"We believe[d]"

 


وَإِذَا خَلَوْا إِلَى شَيَاطِينِهِمْ

وَإِذَا

خَلَوْا۟

إِلَىٰ

شَيَٰطِينِهِمْ

এবং যখন

গোপনে মিলে

সাথে

তাদের শয়তান (বন্ধুদের)

But when

they are alone

with

their evil ones

 


قَالُوا إِنَّا مَعَكُمْ

مَعَكُمْ

إِنَّا

قَالُوٓا۟

তোমাদের সাথে

'নিশ্চয়ই আমরা

তারা বলে

(are) with you

"Indeed, we

they say

 


إِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِئُونَ (14)

إِنَّمَا

نَحْنُ

مُسْتَهْزِءُونَ

মূলতঃ

আমরা

উপহাসকারী (মু'মিনদের সাথে)''

only

we

(are) mockers"

 


اللَّهُ يَسْتَهْزِئُ بِهِمْ

ٱللَّهُ

يَسْتَهْزِئُ

بِهِمْ

আল্লাহ্‌

উপহাস করেন

তাদের সাথে

Allah

mocks

at them

 


وَيَمُدُّهُمْ فِي طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُونَ (15)

وَيَمُدُّهُمْ

فِى

طُغْيَٰنِهِمْ

يَعْمَهُونَ

এবং তাদের ঢিলদেন

মধ্যে

তাদের অবাধ্যতার

তারা উদভ্রান্ত হয়ে ফিরে

and prolongs them

in

their transgression

they wander blindly